The Web This Blog

Friday, July 30, 2021

আমার জীবনে Mentor এর ভুমিকা (শেষ অংশ)

{ প্রথম অংশ }

২০০৪ সাল থেকে আমার কর্মজীবন শুরু। জীবনের একটি দীর্ঘ সময় কেটেছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজ করে। যখন যেই প্রতিষ্ঠানে ছিলাম সেখান থেকে চেষ্টা করেছি নতুন নতুন কিছু শিখতে ও নিজের মেধা ও জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করতে।

১। মাহে আলম খানঃ- MAK ভাই এর সাথে আমার পরিচয় ২০০৪ সাল থেকে। তিনি ছিলেন আমার Computer Hardware শিক্ষক। আমার কাছে অন্য সকল শিক্ষক ও Boss রা হলো জীবন গ্রন্থের একেকটি অধ্যায়। আর মাহে ভাই আমার জীবনের একটি অসমাপ্ত কাব্য। ২০০৪ থেকে এখন পর্যন্ত তিনি ছিলেন শিক্ষক, গুরু, Boss, বড় ভাই, কর্মজীবনের অভিভাবক ........... ইত্যাদি। এখন পর্যন্ত আমার জীবনের যত সাফল্য তার সাথে কোন না কোন ভাবে মাহে ভাইয়ের অবদান রয়েছে। আমার bLog এ তাকে নিয়ে অনেক লেখা আছে।

২। এ এইচ রবিন ও সামিম স্যারঃ- আমার কর্মজীবন শুরু করি ২০০৪ সালে INFOBASE থেকে। যার কর্নধার ছিলেন এই দুই বন্ধু। আমার সৌভাগ্য এমন দুইজন মানুষের সাথে আমার পরিচয় হয়েছিল। এই মূহর্তে রবিন স্যারের একটি কথা মনে পরছে, “কর্মজীবনে মনে রাখবে তোমার Senior রা কেও তোমাকে নিজ থেকে কিছু শিখাবে না, তোমাকেই তাদের কাছ থেকে তোমার বুদ্ধি দিয়ে শিখে নিতে হবে।”

সামিম স্যার একদিন তার গাড়িতে করে আমাকে বাসায় নিয়ে যায় তার কম্পিউটার ঠিক করতে কথা প্রসঙ্গে তিনি বলেছিলেন, “অফিস চলাকালিন তুমি মনে রাখবে কাজ শেষ বলে কোন কথা নাই, তোমার কাজ না থাকলে অন্যেরা কি কাজ কিভাবে করছে শিখার চেষ্টা করবা। জীবনের কোন সময় কোন শিক্ষাটা কাজে আসবে তুমি জাননা। প্রতিনিয়ত নতুন কিছু শিখার চেষ্টা করবা।”

৩। তপন সাহাঃ- সাল ২০০৬, P.N. COMPOSITE এর শুরুর দিকে চাকরি তে যোগদান করি। তপন স্যার ছিলেন আমাদের প্রতিষ্ঠানের পরিচালক। একদিন রাত্রে আমার শিফট চলছিল। তেমন কোন কাজ ছিলনা স্যার এসে আমাদের Color Lab এ বসলেন ও অন্য সবার খোজ খবর নিচ্ছিলেন। আমার পরিচয়, লেখা-পড়া ইত্যাদি জানার পর তিনি কিছুটা অবাক হন আমার ছোট মামার নাম শুনে। বাংলাদেশে গার্মেন্টস ও টেস্টটাইল সেক্টরে তার ব্যপক পরিচিতি। তিনি বলেছিলেন তুমিতো তাহলে বেশিদিন এখানে চাকরি করবে না। আমাকে জিজ্ঞাসা করলো আগামী দশ বছর পর তুমি নিজেকে কোথায় দেখতে চাও। আমি অনেকটা সাহস নিয়েই বলেছিলাম স্যার নিজেকে একজন ব্যবসায়ি হিসেবে দেখতে চাই। আমার প্রতিষ্ঠানে তারাই কাজ করবে যাদের আমার মত মেধা আছে কিন্তু লেখা পড়ার সুযোগ বেশি পায়নি। স্যার শুনে কিছুটা হাসলেন।

তখন আমি পুরান ঢাকা থেকে প্রতিদিন বাসে কোনাবাড়ী, গাজিপুর অফিস করতাম। তিনিই আমাকে প্রথম বুদ্ধি ও সুযোগ করে দিয়েছিলেন চাকরির পাশাপাশি ব্যবসা করতে। তখন আমি ঢাকা থেকে কিছু কিছু Garments Accessories নিয়ে ফ্যাক্টরিতে Supply দেওয়া শুরু করি। ব্যবসার হাতেখড়ি সেই থেকে শুরু .......।

৪। জামিল আহমেদঃ- ২০০৪ বা ২০০৫ সালের দিকে জামিল ভাইয়ের সাথে আমার পরিচয় একটি কম্পিউটার মেলাতে। তখন আমি ও ম্যাক ভাইয়ের কয়েকজন ছাত্র OpenSource নিয়ে কাজ করছিলাম।

কর্মক্ষেত্রে আমার জীবনের সবচেয়ে বড় সুযোগ দেয়ার অবদান জামিল ভাইয়ের। TigerIT তে আমি ২০০৭ সালে যোগদান করি। তখন অফিস ছিল মগবাজারে। কাজ যে বিনোদনের মাধ্যমেও করা যায় TigerIT তে যোগদান না করলে জানাও হতো না আমার। যখন কাজ তখন দিন রাত শুধুই কাজ, আবার যখন বিনোদন তখন শুধুই বিনোদন। অফিসের যেকোন কঠিন কাজ কিভাবে মাথা ঠান্ডা রেখে করা যায় জামিল ভাইয়ের সাথে পরিচয় না হলে হয়তো শেখাই হতো না। ব্লগটি লিখতে বসে TigerIT এর সবারই মুখটি খুব মনে পরছে। আমার জীবনের সবচেয়ে মধুর ও সর্নালী সময়টুকু পার করেছি এখানেই।  

ম্যাক ভাই ও জামিল ভাইয়ের হাত ধরেই Ankur ICT Development Foundation এ যোগদান করি। কাজের কারনেই তখন দেশের বিভিন্ন জেলা শহরে যাওয়ার একটি সুযোগ হয় আমার। তখন আমার মাথায় দেশ ও দেশের সুবিধাবন্চিত মানুষের জন্য কিছু একটি করার চিন্তা মাথায় ঠোকে। সেই চিন্তাটি এখনো আছে শুধু সুযোগের অপেক্ষা। জামিল ভাইয়ের হাসিটি খুবই সুন্দর মাঝে মাঝে খুব মনে পরে তার সেই হাসির কথা।

৫। হরিপদ ব্যানার্জীঃ- ২০১৩ সালে Purchase Officer হিসাবে য‌োগদান করি Metro Knitting & Dyeing Mils এ। হরিপদ স্যার কে দেখে অবাক হতাম প্রায় ৬০ উর্ধ বয়স সেই বয়সেই তার যে কর্মদক্ষতা তা আমাদের অনেকেরই হার মানায়। তিনি মনে করতেন যে কাজে যে দক্ষ তাকে দিয়েই সেই কাজটি করানো উচিৎ, তাতে কাজটি সুন্দর হয়। তিনি সকলকে তার পুত্রসম ভালবাসতেন।  

৬। বলরাম সরকারঃ- জীবনের দীর্ঘ সময় চাকরি করার পর যখন ভাবলাম এখন স্থায়ী ব্যবসায় করা দরকার, কিন্তু অভিজ্ঞতা থাকলেও টাকা নেই। কারন চাকরির পাশা পাশি কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দিয়ে আর্থিক ক্ষতির সম্মক্ষিন হই অনেক। ২০১৬ সালে আমার কাকাত ছোট ভাই আমার প্রতি বিশ্বাস রেখে BS Trading নামের একটি প্রতিষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্ব দেয়। যার কাছে আমি কৃতজ্ঞ কারন এখানে না আসলে হয়তো ব্যবসার মূল জিনিসগুলো জানাই হতো না। বলরাম এর ধর্মীয় অনুভুতি, মানুষকে ভালবাসার ক্ষমতা, নতুন নতুন ব্যবসার উদ্ভাবনী শক্তি অসাধরন। এখনও অনেক কিছু শেখার চেষ্টা করছি তার কাছ থেকে।     

প্রিয়পরম শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র-এর আরেকটি বানী দিয়ে লেখা শেষ করবো,

 

শিখলি যে তুই কত-শত

বোধ তো কিছুই ফুটল না!

স্মৃতির বলদ্ হ’লি শুধু

একমুঠো ভাত জুটল না?

আমার জীবনে Mentor এর ভুমিকা (প্রথম অংশ)

করার পথে চলতে গেলে

এতই ঠকা শেখাই দায়,

অতো ঠকে শিখতে গেলে

জীবনে কি পাড়ি পায়?

শিখেছে যে তার কাছে তাই

শেখায় শরণ নেওয়াই ভাল,

নইলে যে ত‌োর ব‌োকা সাহস

ভরজীবনই ঠকিয়ে গেল।

উপরের কথা বা বানীটি যিনি দিয়েছেন আমার জীবনের একমাত্র উপাস্য, আরধ্য দেবতা প্রিয়পরম শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র। আজকের লেখার সাথে বানীটির বেশ মিল আছে বলেই এই বানীটি দিয়ে আমার লেখা শুরু করলাম।

জ্ঞান অর্জনের কোন শেষ নেই। জন্ম থেকে আ-মৃত্যু মানুষ কোন না কোন ভাবে শিক্ষা গ্রহন করেই। নবি কারীম (সঃ) বলেছেন, "দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত জ্ঞান অর্জন কর।"

সময়ের সাথে সাথে মানুষের মনে প্রতিনিয়ত কোন না কোন প্রশ্নের সৃষ্টি হতেই থাকে। শিক্ষা গ্রহন করার বিষয়টি সম্পূর্ন ব্যক্তির নিজস্ব অভিরুচির উপর নির্ভর করে। সবাই একরকম ভাবে শিক্ষা গ্রহন করতে স্বাচ্ছন্দ বোধ নাও করতে পারে। কেউ শিখে Practically, কেউবা চোখে দেখে, কেউ বই পড়ে, কেউবা অভিজ্ঞতা অনুসারে, কেউ চিন্তার মাধ্যমে, কেউবা আবার বিশ্বাসে আরো অনেক পদ্ধতি থাকতে পারে। তবে আমার মতে শিক্ষা গ্রহনের সবচেয়ে সহজ ও জনপ্রিয় পন্থা হচ্ছে শিক্ষক গুরুর মাধ্যমে। একজন শিক্ষক বা গুরুই ছাত্রের ধরন বুঝে তাকে শিক্ষা দিতে পারেন।

অপরদিকে, শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হচ্ছে স্বশিক্ষা। নিজে নিজে যা শিখে সেই শিক্ষা ভুলে যাওয়ার সম্ভাবনা মানুষের খুব কমই থাকে। যে শিক্ষা আমরা সাধারনত নিজের অভিজ্ঞতার মাধ্যমে বা জীবনে ঘটে যাওয়া বড় কোন ঘটনার মাধ্যমে শিখে থাকি। প্রচলিত একটি কথা আছে, "তুমি শিখছিলা কোথায়? আমি ঠেকছিলাম যেথায়।" এই ঠেকে শেখাকেই এক কথায় স্বশিক্ষা বলা যেতে পারে।

প্রতিটি মানুষের কাছে নিজ পরিবার হচ্ছে প্রধান শিক্ষাক্ষেত্র। পিতা-মাতাই তার প্রথম শিক্ষক। আমার জীবনে মা জীবনের তেমনই শিক্ষক। আমার জীবনের এমন কোন ঘটনা নেই যা আমার মা-এর সাথে আলোচনা করিনি। আমার মাকে কতটুকু ভালবাসি তা জানিনা কিন্তু তার খুসির জন্য যেকোন কিছু ত্যাগ করতি রাজি আছি। 

স্বর্গীয় কালি পদ সরকার আমার ঠাকুর দাদা (Grandfather) ১৯৯৯ সালের ১৭ ই জানুয়ারী তিনি মারা যান। তিনি ছিলেন আমার প্রথম পারিবারিক আদর্শ। তিনিই আমার জীবনের বেশীর ভাগ গুনের বীজ রোপন করে দিয়েছিলেন। আমার দুঃখ কিশোর বয়সেই আমি তাকে হারিয়েছি, বেশি কিছু শিখতে পারিনি আর। ধর্ম, বিজ্ঞান, মানবিকতা সহ অনেক কিছুরই ভিত্তি তার হাত ধরেই। তিনিই আমাকে শিখেয়েছিলেন কিভাবে মটর ও ককসিট দিয়ে খেলনা লঞ্চ বানিয়ে নদিতে চালানো যায়। কিভাবে নিজের কাজ নিজেকেই করতে হয়। তিনি বলতেন যতক্ষন নিজের সামর্থ থাকে ততক্ষন অন্যের কাছ থেকে কোন প্রকার সাহায্য নেয়া নিজের যোগ্যতাকেই অপমান করা। আজ তিনি আমাদের মাঝে নেই, যেখানেই থাকুন ভাল থাকুন এই প্রার্থনা। 

রক্তাক্ত প্রান্তর (১৯৬২), নাটকে শহীদ মুনীর চৌধুরী বলেছেন, “মানুষ মরে গেলে পচে যায়, বেঁচে থাকলে বদলায়, কারণে অকারণে বদলায়।”

জীবনের দীর্ঘ সময় অতিবাহিত করার পর আজ আমার সৃতির ভান্ডার থেকে যতটুকু মনে আছে তা থেকে ছাত্র জীবনের কয়েকজন শিক্ষক ও কর্মজীবনের কয়েকজন Boss সম্পর্কে কিছু লেখার চেষ্টা করছি। আজ আমি যেখানে অবস্থান করছি সেখানে তাদের প্রত্যেকের ভূমিকা অপরিসীম। তাদের প্রত্যেকের প্রতি রইল আমার স্বশ্রধ্য প্রনাম ও ভালোবাসা।

১। মোঃ খালেক স্যারঃ- আমাদের পারিবারিক শিক্ষক ছিলেন খালেক স্যার। তিনি গেন্ডারিয়ার উপজেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরে চাকরি করতেন পাশাপাশি আমাদের ছোট কাকা এবং আমাদের সকল ভাই-বোনদের পড়াতেন। আমার জীবনের প্রথম হাতেখড়ি থেকে চতুর্থ শ্রেনী পর্যন্ত তিনি পড়িয়েছিলেন। এই মূহর্তে স্যারের যে বিষয়টি আমার খুব মনে পরছে, তিনি যেদিন বিদ্যালয় থেকে নতুন বই দিতো সেই দিন পড়াতেন না। সেই দিন থাকতো শুধু বই পরিচিতি। প্রতিটি নতুন বই এর গন্ধ শুকতে ও বইয়ের ছবি গুলো দেখতে দিতেন আর বলতেন আগে বইকে ভালবাসতে শিখো তারপর কাল থেকে পড়ালেখা।

২। অসিম কুমার ভৌমিকঃ- অসিম স্যার মূলত ইংরেজীর শিক্ষক ছিলেন। আমি তার কাছে ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম (এস এস সি) শ্রেনী পর্যন্ত সকল বিষয় পড়েছিলাম। তার একাদশ শ্রেনীর ইংরেজী পড়ানোর পদ্ধতি ছিল অসাধরন। কিভাবে ইংরেজীর কোন শব্দ ডিকশেনারী থেকে বের করতে হয় তার কাছ থেকেই শেখা।

৩। বিধান বিশ্বাসঃ- বিধান স্যার এর কাছে আমি নবম ও দশম শ্রেনীর অংক করতাম। তখন কেন যেন মনে হতো তিনি একবার যে অংক শিখাতেন তা আর ভুলার কোন উপায় নেই। যে কোন অংক কি ভাবে সহজে মনে রাখা যায় তিনিই জানতেন। আমরা ছাত্র-ছাত্রীরা তাকে অংকের জাহাজ বলতাম।

৪। রুহুল আমিন হাওলাদারঃ- হাওলাদার স্যার ছিলেন আমাদের গেন্ডারিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞানের শিক্ষক। তার কাছে কয়েক মাস ব্যাচে বিজ্ঞান ও অংক পড়েছিলাম। তার পড়ানোর পদ্ধতির কারনেই আমার জীববিজ্ঞানের প্রতি একপ্রকার ভালোবাসা জন্মায়। ভেবেছিলাম বড় হয়ে শুধু জীববিজ্ঞান নিয়ে লেখা পড়া করবো। যে স্বপ্ন এখনো স্বপ্নই রয়ে আছে। 

৫। বিবেকানন্দ বিশ্বাসঃ- বিবেক স্যার আমাদের পারিবারিক আত্মীয় (দাদা) হয়। ছোট বেলা থেকেই তার সাথে আমার সম্পর্ক। তার কাছে একাদশ থেকে এম,কম শ্রেনী পর্যন্ত পড়ি। তার হিসাব বিজ্ঞান পড়ানো ছিল এতাটাই সাবলীন ও অপ্রতিদন্ধী যে তখন আশে পাশের এলাকা থেকেও প্রচুর ছাত্র-ছাত্র আসতো। তিনি আমাকে ফ্রী পড়াতেন। তখনই আমি প্রতিজ্ঞা করেছিলাম আমিও যদি শিক্ষকতা করি তখন আমিও কিছু ছাত্র ফ্রী পরাবো এবং সেই কারনে আমাদের কচিং সেন্টারে কিছু গরিব ছাত্রদের সবসময় ফ্রী পড়তাম।

৬। অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদঃ- BUET পরিচালিত IAC থেকে আমি ২০১১ সালে Web Design and Application Development কোর্সটি করি। ড. কায়কোবাদ স্যারকে আমার টেলিভিশন ও বিভিন্ন কম্পিউটার মেলায় অনেকবার দেখার সুযোগ হয়েছিল। যখন কোর্সটি ভর্তি হই তখন মনে করেছিলাম স্যার বোধহয় আমাদের ক্লাস করাবেন। সেই সুযোগ আর হয়নি। তবে সৌভাগ্যক্রমে আমাদের Certificate প্রদানের দিন স্যার এসেছিলেন। স্যারের একটি কথা আমার খুব মনে পরে। তখন তিনি তার বক্তিতায় বলেছিলেন, “এই অল্প সময়ে তোমরা এখান থেকে যা শিখলে তা যদি তোমরা কাজে লাগাতে পারো সেটাই তোমাদের পরিশ্রমের সার্থকতা। সব সময় মনে রেখো তোমরা আজ পৃথিবী থেকে যা গ্রহন করলে বা শিখলে তা যেন পরবর্তী প্রজন্মের জন্য কাজের মাধ্যমে কয়েকগুন ফেরত দিতে পার। ”

 

{শেষ অংশ}

Monday, July 5, 2021

সনাতন ধর্মের গোত্র


যুগপুরুষোত্তম শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রকে একবার প্রশ্ন করা হয়েছিল,  গোত্র মানতে হয় কেন?

তার উত্তরে শ্রীশ্রীঠাকুর বলেছিলেন, “প্রতিটি গোত্রই স্ব-স্ব বৈশিষ্ট্যে বিশেষ এক-একটি গোত্র তার Culture, Creed, Character, Conduct (সংস্কৃতি, ধর্মবিশ্বাস, চরিত্র, আচরণ) বহুযুগ ধরে নানাভাবে Achieve (অধিগত) করেছে এই গোত্রধারা কখনও নষ্ট করতে নেই গোত্র ভাঙ্গলে সৰ্ব্বনাশ সেইজন্য ভিন্ন গোত্র দেখে বিয়ে দিতে হয় বিভিন্ন গোত্রের Male and Female-এর (স্ত্রী ও পুরুষের) যখন Proper Combination (উপযুক্ত মিলন) হয় তখন গোত্র ও বংশের গুণগত বৈশিষ্ট্যগুলি সন্তান-সন্ততির মধ্যে Dominant (প্রধান) হয়ে ওঠে আর, Combination (মিলন) ঠিকমত নাহলেই ওগুলি Recessive (হ্রাসমুখী) হয়ে ওঠে সেইজন্য সদৃশ বংশে বিয়ে হওয়া ভাল সেটা হFirst Class Marriage (প্রথম শ্রেণীর বিবাহ) আর, অনুলোম হSecond Class Marriage (দ্বিতীয় শ্রেণীর বিবাহ) অনুলোম বিবাহের ক্ষেত্রেও ঐ ভিন্ন গোত্র-প্রবর এসব ঠিক রেখে করবে কিন্তু প্রতিলোম যেন কখনও না হয় তোমার একটা মেয়েকে যদি কায়স্থ বা বৈশ্যের সাথে বিয়ে দাও তাহলে কিন্তু একেবারে সব Murder (নিকেশ) কারণ, ওর ফলে সব গুণগুলি Recessive (হ্রাসমুখী) য়ে যায়

দীপ রক্ষী, ৫ তাং - ১৪..১৯৫৯ ইং

গত ২০২০ সালের এপ্রিল মাসে লিখেছিলাম “বাঙ্গালী হিন্দুদের জাতিভেদ ও পদবী সমূহ” তারই ধারাবাহিক হিসাবে আজ “গোত্র” বিষয়ে কিছু লেখার চেষ্টা করছি। শ্রীশ্রীঠাকুরের কথা মত আমাদের নিজ গোত্র জানা ও তা মানা কতটা জরুরী ও প্রয়জনীয়।

সাধারন ভাষায় বলতে গেলো গোত্র শব্দের অর্থ বংশ বা গোষ্ঠীকে বোঝায়। সনাতন ধর্মে গোত্র মানে একই পিতার ঔরসজাত সন্তান-সন্ততিদের দ্বারা সৃষ্ট বংশ পরম্পরা। কিন্তু গোত্র দ্বারা কখনো কখনো অঞ্চল এবং বিশেষ চিহ্ন নির্দেশ করতে দেখা যায়। বৈদিক শাস্ত্র অনুসারে, একটি বংশের রক্ত প্রবাহিত হয় তাদের পুরুষ পরম্পরায়। সূতরাং, বংশের রক্তের ধারক ও বাহক হলো পুরুষ। সনাতন ধর্মের বংশ রক্ষার ধারায় ছিলেন প্রথম সত্য যুগের শুরুতে ব্রহ্মার মানস সন্তানদের মধ্যে অন্যতম ঋষিগণ। পরবর্তীতে অন্যান্য ঋষির বংশ পরম্পরাও পরিলক্ষত হয়।

এই একেকজন ঋষির বংশ পরম্পরা তাদের নামে এক একটি গোত্র হিসেবে পরিচিত লাভ করে। সে হিসেবে একই গোত্রের বংশীয়গণ পরস্পর ভাইবোন। এমনকি একই বংশের স্বজনেরা পরবর্তীতে জীবিকা নির্বাহের প্রয়োজনে, সাধন-ভজন, পরমেশ্বর ভগবানের বাণী প্রচারের প্রয়োজনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়লে পিতার নামের সাথে গোত্র নামের গুরুত্ব প্রকাশ পায়। যেমন- কাশ্যপ মুনির বংশধরেরা নিজেদের “কাশ্যপ গোত্রস্য” বা কাশ্যপ মুনির বংশ পরিচয় দিয়ে থাকেন।

এভাবে পর্যায়ক্রমে আরো অনেক গোত্রের নাম পাওয়া যায়। সনাতন ধর্মে প্রকট আছে বা অহরহ যেসব গোত্র দেখা যায় তা নিয়ে আলোচনা করবো। একই গোত্রের লোকজনকে সমগোত্রীয় বলা হয়। সোজা কথা এরা পরস্পর নিকট-আত্মীয়। আর অন্যান্য গোত্রের লোকজনের সাথে তারা পরস্পর আত্মীয়তার বন্ধনে আবদ্ধ এই কারণে যে, আমরা সবাই প্রপিতামহ ব্রহ্মা থেকে এসেছি যদিও আমাদের আদি পিতা-মাতা যথাক্রমে মনু ও শতরূপা।

সমগোত্র মানে একই পিতৃবংশ। যেমন কাশ্যপ গোত্র। মুনি কশ্যপ ঋষির বংশধর। ব্রহ্মার মানস পুত্রগণের থেকে আগত প্রতিটি বংশ এক একটি গোত্র বা রক্তের ধারায় প্রবাহিত। একই গোত্র চারটি বর্ণে থাকতে দেখা যায়। কারণ, একই ঋষির সন্তানরা একেক সময়ে একেক কাজে মনোযোগী হয়ে থাকে। যে শাস্ত্র অধ্যয়ণ বা বুদ্ধিভিত্তিক (আধুনিক সমাজে যাকে বুদ্ধিজীবী বলা হয়) জীবিকা অবলম্বন করে সে ব্রাহ্মণ হিসেবে, রাজধর্ম পালনকারী ক্ষত্রিয়, ব্যবসা-বাণিজ্যে মনোযোগী হলে সে বৈশ্য আর এসব পেশাগত লোকদের সেবা করেই সন্তুষ্ট অর্জনে আগ্রহীরা শূদ্র হিসেবে পরিচিতি লাভ করে থাকে। এ গুণাবলীসমূহ কেউ জন্মে প্রাপ্ত হয় না, অর্জন করতে হয়। তাই বর্নাশ্রম সঠিক কিন্তু বর্ণপ্রথা ভুল ও মিথ্যা যা ক্ষত্রিয় ধর্ম পালনে পুরোপুরি অপারগ রাজা বল্লাল সেন তার রাজ-অপকর্ম ঢাকতে শুরু করেছেন। ধার্মিক ও পন্ডিতদের অত্যাচার করে রাজ্য থেকে বিতারিত করে। আর এটা পুরোপুরি কার্যকর করেছেন তারই পুত্র রাজা লক্ষ্মণ সেন।

সনাতন ধর্মে নিকটাত্মীয় বা সমগোত্রে বিবাহ নিষিদ্ধ। কারণ হিসেবে বৈদিক শাস্ত্রসমূহ বিশেষ করে মনুসংহিতায় বলা হচ্ছে, একই রক্তের সম্পর্কের কারো সাথে বিবাহ হলে সন্তান বিকলাঙ্গ, শারীরিক বা মানসিক প্রতিবন্ধী, মেধা ও বুদ্ধিহীন হয়। শিশু নানা রোগে জরাজীর্ণ হয়ে থাকে। তবে একান্তই প্রয়োজন হলে/ পাত্র-পাত্রী না পাওয়া গেলে সেক্ষেত্রে ১৪ পুরুষ পেরিয়ে গেলে তখন বিবাহ করা যেতে পারে। তবে তা যথাসম্ভব এড়িয়ে চললেই ভালো।

বর্তমান চিকিৎসা বিজ্ঞানও এটি স্বীকার করেছে। তারা বলছেন, নিকটাত্মীয়দের মধ্যে বিয়ের পরিণামে যে সন্তান হয়, তার মধ্যে জন্মগত ত্রুটি দেখা দেয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি। ‍The Lancet” (দ্য ল্যানসেট) সাময়িকীতে প্রকাশিত এক গবেষণা নিবন্ধে বিজ্ঞানীরা এ তথ্য জানিয়েছেনFirst cousin marriage doubles risk of birth defects in children  বিস্তারিত

 

সনাতন ধর্মের প্রচলিত কিছু গোত্র ও বিস্তারিত। যারা যেই ঋষির বংশধর তারাই সেই গোত্র।

·       অগস্ত্যঃ- দেবতা মিত্রবরুণ ঔরসে ও উর্বশীর গর্ভে অগ্যস্ত ঋষির জন্ম। পুরানমতে অগ্যস্ত ঋষি একবার সমুদ্রপান করেছিলেন। ভগবান শ্রীরামচন্দ্র বনবাস কালে অগ্যস্ত ঋষির আশ্রমে থেকে অক্ষয়তূণীরদ্বয়, বৈষ্ণবধনু ও মহাস্ত্র প্রাপ্ত হয়েছিলেন। এই গোত্রের অন্যান্ন প্রবর ঋষিরা হলো- জৈমিনী ও দধিচী।  

 

·        অত্রিঃ- অত্রি ঋষি ছিলেন ব্রহ্মার মানস পুত্র ও সপ্তঋষির অন্যতম। ঋষি অত্রি ও মাতা অনুসূয়ার পুত্রদয় হলেন, মহর্ষি দুর্বাসা, সোম ও ভগবান দত্তাত্রেয় ত্রিনাথ। এই গোত্রের অন্যান্ন প্রবর ঋষিরা হলো- আত্রেয় ও শাতাতপ।

 

·        আত্রঃ- আত্র ঋষির বংশধরা ভারতবর্ষে আয়ুর্বেদের বহু ক্ষেত্রে অবদান রেখেছিলেন। এই গোত্রের অন্যান্ন প্রবর ঋষিরা হলো- শাতাতপ ও শাঙখ্য।

 

·       আলিমান /  আলম্ব্যায়নঃ- আলম্যান ঋষি ছিলেন একজন বৈদিক ঋষি। এই গোত্রের অন্যান্ন প্রবর ঋষিরা হলো- শাঙ্কায়ন ও শাক্টায়ণ।

 

·       আঙ্গিরসঃ- ঋষি আঙ্গিরস ছিলেন সপ্তঋষির একজন ঋষি অঙ্গিরার পুত্র। এই গোত্রের অন্যান্ন প্রবর ঋষিরা হলো- বশিষ্ঠ ও বার্হস্পত্য।  

 

·       কাণ্বঃ- কাণ্ব ঋষি ছিলেন পুরুবংশীয় প্রতিরথের পুত্র। তারই পুত্র মেধাতিথি ঋগবেদ গ্রন্থ প্রণয়ন করে ব্রাহ্মনত্ব লাভ করেছিলেন। এই গোত্রের অন্যান্ন প্রবর ঋষিরা হলো- অশ্বথ ও দেবল।

 

·       কাত্যায়নী / কাত্যায়ণঃ- ঋষি কাত্যায়ণের বংশধরদের বলা হয় কাত্যায়ণ গোত্র। রামায়নে কাত্যায়ণ ঋষির বর্ননা পাওয়া যায়। তিনি বেদের অনুক্রমকার রচয়িতা ছিলেন। এই গোত্রের অন্যান্ন প্রবর ঋষিরা হলো- অত্রি, ভৃগু ও বশিষ্ঠ।

 

·       কাশ্যপঃ- ব্রহ্মা পুত্র মরিচী ঔরসে ও মাতা কলার গর্ভে জন্মগ্রহন করেন ঋষি কাশ্যপ। কাশ্যপ ঋষি দক্ষ প্রজাপতির ১৩ কন্যা বিবাহ করেন। তিনি ছিলেন দেবদৈবত্যাদির জন্মদাতা। এই গোত্রের অন্যান্ন প্রবর ঋষিরা হলো- অপ্সার ও নৈধ্রুব।

 

·       কুশিকঃ- কুশিক ঋষি ছিলেন সোমবংশীয় নরপতি কুশের অন্যতম পুত্র। এই গোত্রের অন্যান্ন প্রবর ঋষিরা হলো- কৌশিক ও বিশ্বামিত্র। 

 

·       কৌন্তল্যঃ- স্কন্দপুরানে কৌন্তল্য ঋষির বর্ণনা পাওয়া যায়। ঋষি কৌন্তল্য বংশধরদের কৌন্ডল্য   গোত্র বলা হয়। এই গোত্রের অন্যান্ন প্রবর ঋষিরা হলো- স্তিমিক ও কৌৎস্য।

 

·       কৌশিকঃ- রামায়নে এই ঋষির উল্লেখ পাওয়া যায়। কৌশিক ঋষির বংশধররাই এই গোত্র বলা হয়। এই গোত্রের অন্যান্ন প্রবর ঋষিরা হলো- অত্রি ও জামদগ্ন্য।

 

·       কৃষ্ণাত্রেয়ঃ- হরিবংশ পুরানে এই মহর্ষির উল্লেখ পাওয়া যায়। এই গোত্রের অন্যান্ন প্রবর ঋষিরা হলো- আত্রেয় ও আবাস।

 

·       গর্গঃ- গর্গ ঋষি ছিলেন একজন জ্যোতির্বিদ ও যাদববংশের কুলগুরু। তার পুত্রী ছিলেন গার্গীসংহিতার রচয়িতা। এই গোত্রের অন্যান্ন প্রবর ঋষিরা হলো- গার্গ্য, মান্ডব্য ও কৌস্তভ।

 

·       গৌতমঃ- গোতম ঋষির পুত্র ছিলেন ঋষি গৌতম। তিনি গৌতমসংহিতা রচনা করেছিলেন। রামায়নে আমরা গৌতম ঋষি ও অহল্যার কাহিনী পড়েছি। এই গোত্রের অন্যান্ন প্রবর ঋষিরা হলো- আঙ্গিরস, বার্হস্পত্য, অপ্সার ও নৈধ্রুব।

 

·       ঘৃতকৌশিকঃ- ঋষি ঘৃতকৌশিক ছিলেন কৌশিক ঋষির পুত্র। এই গোত্রের অন্যান্ন প্রবর ঋষিরা হলো- কুশিক ও কৌশিক। 

 

·       চান্দ্রায়ণঃ-

 

·       জাতুকর্ণঃ- জাতুকর্ণ ঋষি ছিলেন ঋষি আত্রেয় এর প্রধান শিষ্য। তিনি একটি দুস্প্রাপ্য আয়ুর্বেদ শাস্ত্র রচনা করেছিলেন। এই গোত্রের অন্যান্ন প্রবর ঋষিরা হলো- বশিষ্ঠ ও অত্রি।

 

·       জামদগ্ন্যঃ- ঋষি জামদগ্ন্য ছিলেন ভগবান পরশুরামের ভ্রাতা। এই গোত্রের অন্যান্ন প্রবর ঋষিরা হলো- জমদগ্ন্যি, বশিষ্ঠ ও ঔর্ব্ব।

 

·       ধনন্বন্তরি / ধন্বন্তরীঃ- সমুদ্র মন্থনের সময় এই ঋষির উৎপত্তি হয়। ঋষি ধন্বন্তরী ছিলেন একজন সুচিকিৎসক। এই গোত্রের অন্যান্ন প্রবর ঋষিরা হলো- গৌতম, অপসার, আঙ্গিরস, বার্হস্পত্য ও নৈধ্রুব।  

 

·       নাগঋষিঃ-

 

·       পরাশরঃ- ঋষি পরাশর ছিলেন বশিষ্ঠ মুনির পৌত্র। তিনি ঋষি পুল্যস্তের কাছে বিষুপুরান শ্রবন করে ও মুনি মৈত্রেয় কাছে তা বর্ণনা করতেন। ঋষি পরাশর পুত্র ছিলেন মহাভারত রচয়িতা বেদব্যাস। এই গোত্রের অন্যান্ন প্রবর ঋষিরা হলো- বশিষ্ঠ ও শান্ত্রি।

 

·       বশিষ্টঃ-

 

·       বাঘ্র ঋষিঃ-

 

·       বাৎস্যঃ- বাৎস্য ঋষি ছিলেন ভৃগুবংশীয় হরির পুত্র ও সাবর্নী মুনির ভ্রাতা। এই গোত্রের অন্যান্ন প্রবর ঋষিরা হলো- ঔর্ব্ব, চ্যবন, ভার্গব, জামদগ্ন্য ও আপ্লুবৎ।

 

·       বিষ্ণুঃ- বিষ্ণু ঋষির বংশধররাই এই গোত্রের অধিকারি। এই গোত্রের অন্যান্ন প্রবর ঋষিরা হলো- বুদ্ধি ও কৌরব।

 

·       বিশ্বামিত্রঃ-

 

·       বৃদ্ধিঃ- ঋষি বৃদ্ধির পরবর্তী বংশধরদের বলা হয় বৃদ্ধি গোত্র। এই গোত্রের অন্যান্ন প্রবর ঋষিরা হলো- কুরু, আঙ্গিরস ও বার্হস্পত্য।

 

·       বৃহস্পতিঃ- দেবগুরু বৃহস্পতির বংশধরদের বলা হয় বৃহস্পতি গোত্র। ঋষি বৃহস্পতি ছিলেন ব্রহ্মা ও অঙ্গিরা পুত্র। এই গোত্রের অন্যান্ন প্রবর ঋষিরা হলো- কপিল ও পর্ব্বন।

 

·       ভরদ্বাজঃ- দেবগুরু বৃহস্পতির পুত্র ঋষি ভরদ্বাজ। কথিত আছে হিমালয় দর্শনে গিয়ে অপ্সরা ঘৃতাচীর প্রেমে পরেন। তার পুত্র ছিলেন রথী আচার্য্য দ্রোণ।এই গোত্রের অন্যান্ন প্রবর ঋষিরা হলো- আঙ্গিরস ও বার্হ্যস্পত্য।

 

·       ভার্গবঃ-

 

·       মৌদগল্যঃ- চন্দ্রবংশীয় হর্য্যাশ্বের পুত্র মুদগল থেকে তার উৎপত্তি। গুরু কৃপাচার্য ছিলেন এই গোত্রের। এই গোত্রের অন্যান্ন প্রবর ঋষিরা হলো- ঔর্ব্ব, চ্যবন, ভার্গব, জামদগ্ন্য ও আপ্লুবৎ।

 

·       শক্তিঃ- ঋষি ছিলেন অঙ্গীরা বংশীয় একজন মহান ঋষি। এই গোত্রের অন্যান্ন প্রবর ঋষিরা হলো- বশিষ্ঠ ও পরাশর।

 

·       শিবঃ- ভগবান শিবের কন্ঠ হতে সৃষ্ট শিব ঋষি। নাথ ও দেবনাথ যোগিদের বলা হয় শিব গ‌োত্র। এই গোত্রের অন্যান্ন প্রবর ঋষিরা হলো- শম্ভু, সরোজ, ভূধর ও আপ্লবৎ।

 

·       শান্ডিল্যঃ- ঋষি শান্ডিল্য ছিলেন ব্রহ্মাপুত্র প্রচেতার পৌত্র। শান্ডিল্য ঋষিই ভক্তি সূত্রের প্রনেতা তাই তাকে ভক্তিমার্গের পথ প্রদর্শক বলা হয়। এই গোত্রের অন্যান্ন প্রবর ঋষিরা হলো- আসিত ও দেবল।

 

·       শুনকঃ- শুনক ঋষি ছিলেন মুনি ঔর্ব্বের পৌত্র। এই গোত্রের অন্যান্ন প্রবর ঋষিরা হলো- শৌনক ও গৃৎসমদ।

 

·       সাবর্ণঃ- সাবর্ণ ঋষি ছিলেন ভৃগুবংশীয় হরির পুত্র, নৈমিষ্যারণ্য নিবাসী এক মহাতপস্বী। তারই পর্থনায় বায়ুদেব পুরানকথা কীর্তন করতেন। এই গোত্রের অন্যান্ন প্রবর ঋষিরা হলো- ঔর্ব্ব, চ্যবন, ভার্গব, জামদগ্ন্য ও আপ্লুবৎ।

 

·       হোবি ঋষিঃ-

 

বিঃদ্রঃ তথ্যগুলো সংগ্রহীত তাই কোন ভুল থাকলে আমাকে জানাবেন সংশোধন করে দিবো।

 

তথ্যসূত্রঃ গোত্র