নানা বিধ ব্যস্ততা এর কারনে অনেকদিন যাবত কিছু লেখা হচ্ছে না। আসলে চাকরি ছাড়ার পর কিছুদিন নিজেকে কাজ থেকে বিরতি দিলাম। মাঝে মাঝে কিছু বিরতি পরবর্তী কাজের উৎসাহ ও কর্মশক্তি জোগান দেয়। এখন আবার নিজেকে পৃথিবীতে টিকিয়ে রাখার জন্য কাজ করে যাচ্ছি বা চেষ্টা করছি।
আসলে এটি আমার অনেকদিনের একটি অপ্রকাশিত গল্প। একান্তই নিজের। মনের একটি কোনে পরে ছিল। কিছুদিন যাবৎ মাথা চাড়া দিয়ে উঠলো। যারা পড়বেন তারা হয়তো বলতে পারেন অপ্রকাশিত গল্প তাহলে কেন অপ্রকাশিত হল? জনৈক এক মনিষী বলেছিলেন, “দুঃখের কথা কারো সাথে আলোচনা করলে তাতে দুঃখ কমে, আর সুখের কথা বললে তাতে সুখের পরিমান বাড়ে।” সবাই যানে আমার বন্ধুর (প্রকৃত বন্ধু) সংখ্যা অনেক কম। তাই মাঝে মাঝে আমার এই ব্লগ-এ কিছু লিখে মনটা হালকা করি।
এতক্ষণ লেখক হুমায়ুন আহমেদ-এর মত অনেক প্রারম্ভিক আলোচনা বা প্যাচাল লিখলাম। সে যাই হোক, এখন আসল কথায় আসা যাক।
আমার মনে হয়, প্রতেক সুস্থ মানুষের কাছে তার পরিবারের গুরত্ব সবার আগে। আমারা চাকরি বা ব্যবসা যাই করি না কেন তা নিজের ও আমাদের পরিবারের জন্যই। তাই আমাদের এমন কোন চাকরি বা ব্যবসা করা উচিৎ নয় যাতে পরিবার থেকে দুরে যেতে হয়। হে প্রভু, আমাকে আমার পরিবার-পরিজন এর সাথে যেন সকল সময় ভালো ভাবে সময় কাটাতে পারি তার জন্য তোমার আর্শীবাদ কামনা করি।
সময়ের সাথে মানুষের চাহিদা রুচি-পছন্দ সব পরিবর্তন হয়, এটাই পৃথিবীর ধর্ম বা নিয়ম। এখন আমার পরিবার বলতে মা, বাবা আর আমি এবং অন্যান্ন। দুই বোন ছিল তাদের বিয়ে হয়ে গেছে। পরম পিতার আর্শীবাদে হয়ত কিছুদিন এর মধ্যে আমি একা থেকে আমরা দুই জন হব, তারপর তিন, তারপর চার। এভাবেই পৃথিবী থেকে একদিন হয়ত চলে যাব। কিন্তু রয়ে যাবে আমার কর্মকান্ড গুলো। আমার মত ছোট বেলায় সবাই একটি ভাব-সম্প্রসারণ পড়ে থাকবেন, “মানুষ বাঁচে তার কর্মে, বয়সের মাঝে নয়।” যখন এটি পড়তাম তখন এর মর্ম কতটা বুঝতাম জানিনা তবে এখন বুঝি।
এখন মাঝে মাঝে যখন একা থাকি তখন নিজের অজান্তেই ফেলে আসা দিনগুলো খুব মনে পড়ে। আমার নিজের ভুল ও ভাল / খারাপ কাজ গুলো ভাবতে চেষ্টা করি। জীবনের ২৮-২৯ টি বছর পার করে এসেছি। অনেক সিদ্ধান্তই ঠিক ছিল আবার অনেক গুলাই ভুল। সঠিক সিদ্ধান্ত দিয়েছে আমাকে নানান সাফল্য অন্যদিকে ভুল সিদ্ধান্ত গুল আমার জীবন চলার গতি কিছুটা হলেও মন্থর করে দিয়েছে।
এখন নিজেকে সমাজে একজন সু-প্রতিষ্ঠিত মানুষ হিসাবে তৈরি করার যুদ্ধে রত আছি। আমার বিশ্বাস পরম পিতার আর্শীবাদে একদিন হয়ত তা হতে পারব। সময়ই বলে দিবে কতটা হতে পেরেছি। আমার পরিচিত অনেকে জানতে চায় কেন আমি এত ভাল একটি চাকরি ছেড়ে দিলাম? তার সঠিক উত্তর আমি দিতে পারি না। কেন ছাড়লাম??? যারা “গুরুদক্ষিনা” (ভারতীয় বাংলা সিনেমা) দেখেছেন সেখানে নায়ক তাপস পাল এর মত আমার অবস্থা এখন। যাদের ছায়ায় এত বড় হলাম (চাকরি ক্ষেত্রে) তাদের কাছ থেকেই এত দূরে থাকতে হবে ভাবিনি। আমি জানতাম একদিন চাকরি ছাড়তে হবে, কিন্তু এমন ভাবে ছাড়তে হবে তা কখনই ভাবিনি। এখনও তার সঠিক কোন উত্তর আমি খুজে পাচ্ছি না। এটা কি আমার কোন ভুল নাকি সময়ের দাবি??
এখন একটাই সান্তনা নিয়ে নিজেকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি, পরম পিতা যা করেন তা নিশ্চয় তার সন্তানের জন্য মঙ্গলের জন্য। পৃথিবীটা ছোট, সেই তুলনায় বাংলাদেশ আর ছোট। বেচে থাকলে হয়ত ফেলে আসা মানুষ গুলো যাদের কে একসময় আর্দশ হিসাবে গ্রহন করেছিলাম তাদের সাথে দেখা হবেই। সবশেষে একটি গানের দুটি লাইন বলে শেষ করবো, “আমি আগের ঠিকানায় আছি / সময় করে এস একদিন / দুজনে কিছুক্ষন রব পাশাপাশি।” সবাই ভালো থাকেন।
No comments:
Post a Comment