~~
প্রথম অংশ ~~
~~
শেষ
অংশ ~~
বাঙ্গালী
হিন্দুদের জাতিভেদ এর মত
পদবীগুলোও বেশ বিচিত্র। এই
ধর্মের মানুষের মধ্যে যেমন
ধর্মীয় জাতিভেদ প্রথার প্রভাব
বিদ্যমান তেমনই ঐতিহ্যবাহী
পেশা হতে তাদের
পদবী
গ্রহণের রেওয়াজও
বিদ্যমান।
জাতিভেদের সাথে পদবীগুলো কবে
থেকে শুরু হয়ছে তা নিয়ে নানা
মুনীর নানান মত বিদ্যমান।
অনেকের মতে বৈদিক যুগে মানুষের
কোন পদবী ছিল না। পরবর্তী যুগে
লোক সংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে
কর্মভেদের প্রয়োজন দেখা দেয়
তখনই এই বর্ণভেদ সৃষ্টি হয়েছিল।
প্রথমদিকে এই বর্ণভেদ কর্মগত
ছিল বংশগত ছিল না,
তাই
একই পরিবারের কেউ ব্রাহ্মণ,
কেউ
ক্ষত্রিয় বা কেউ বৈশ্যের কাজও
করতো।
শ্রুতি
থেকে বেদ যখন লিপিবদ্ধ হয়
ঋষি ব্যাসদেব,
তিনি
কি ব্রাক্ষণ ছিলেন?
ব্রাহ্মণ
পৈতা ধারণ করার সময় তাঁকে যে
“গায়ত্রী” মন্ত্র জপ করতে
হয় সেই গায়ত্রী মন্ত্রের
যিনি দ্রষ্টা মহর্ষি বিশ্বামিত্র
তিনি জাতিতে ব্রাক্ষণ ছিলেন
কি?
দেবতারা
যাঁর সাহায্যে স্বর্গ পুনরুদ্ধার
করেন এবং যাঁর আত্মত্যাগ জগৎ
চির স্মরণীয়,
সেই
দধীচি মুনি জাতিতে শূদ্র
ছিলেন। যাঁকে দক্ষিণ ভারতের
উদ্ধারকর্তা বলা হয় সেই
অগস্ত্য মুনি ও শূদ্র ছিলেন।
ভারত
বর্ষে সম্রাট হর্ষবর্ধন বা
হর্ষ নামক এক খ্যাতনামা সম্রাট
(৬০৫
থেকে ৬৪৭ বা ৬৪৮ খ্রিষ্টাব্দ)
এর
সময় কালে ভারতে কৌলীন্য বা
কুলীন প্রথার শুরু হয় এবং সেন
বংশের দ্বিতীয় রাজা বল্লালসেন
(১১৬০
থেকে ১১৭৮ খ্রিষ্টাব্দ)
সর্বপ্রথম
বাংলায় কৌলীন্য প্রথা চালু
করেছিলেন বলে ইতিহাসে পাওয়া
যায়। তখন থেকেই নামের সাথে
এই পদবীগুলো যুক্ত করার রেওয়াজ
শুরু হয়েছিল। বাঙ্গালী হিন্দুরে
কখনো তাদের জম্নগত বর্ণ ও
পেশার কারনে তাদের পদবী বহুবার
পরিবর্তন করেছে,
যার
কারনে এখন এটা বুঝা অনেকটাই
জটিল রূপ ধারন করেছে। ইংরেজ
শাসন আমলে তাদের কাজ কর্মের
সুবিধার কারনে ও তাদের ভাষাগত
উচ্চারনের কারনেও অনেক গুলো
পদবী সৃষ্টি হয়েছিল।
নং
|
ব্রাহ্মণ
|
ক্ষত্রীয়
|
বৈশ্য
|
শূদ্র
বা
নমঃ
স্বেজ
|
কায়স্থ
|
ভূ-স্বামী,
ইংরেজ
থেকে প্রাপ্ত
|
অন্যান্য
পদবী
|
1
|
অধিকারী
|
বর্ম্মন
|
রায়
|
ভক্ত
|
চাকী
|
মুন্সী
|
কানুনগো
|
2
|
আচার্য্য
/
আচার্য্যী
/
আচার্য
|
রুদ্র
|
কুরী
|
দাস
|
কর
|
চাকলাদার
|
কারিগর
|
3
|
উপাধ্যায়
|
রুদ্র
|
ব্যাপারী
|
মজুমদার
|
গুপ্ত
|
তালুকদার
|
কর্মকার
|
4
|
কাঞ্জিলাল
|
ভদ্র
|
সরকার
|
মন্ডল
|
মিত্র
|
রায়
|
ঘটক
|
5
|
গঙ্গোপাধ্যায়
/
গাঙ্গুলি
|
সিংহ
|
খাঁ
|
সরকার
|
বাগচী
|
বাহাদুর
|
মহন্ত
(শ্রীচৈতন্য
প্রচারিত বৈষ্ণব)
|
6
|
গোস্বামী
|
সেনগুপ্ত
|
বালো
|
হালদার
|
নন্দী
|
গোঁসাই
|
|
7
|
ঘোষাল
|
ভাওয়াল
|
মল্লিক
|
রায়
|
দে
|
ঠাকুর
|
পালাকার
|
8
|
চক্রবর্তী
/
চক্রবর্ত্তী
|
পালিত
|
মৃধা
|
সর্দ্দার
|
ধর
|
প্রধান
|
কীর্তনীয়া
|
9
|
চট্টোপাধ্যায়
/
চ্যাটার্জী
|
রক্ষিত
|
তরফদার
|
বাসফোর
|
দত্ত
|
মল্লিক
|
নাগ
(শাঁখারী)
|
10
|
তেওয়ারি
/
ত্রিবেদী
(পশ্চিমা)
|
ভানুশালী
|
ভৌমিক
|
মল্লবর্মা
|
গুহ
|
রায়চৌধুরী
|
ভাঁড়
|
11
|
দেবনাথ
/
নাথ
|
আদিত্য
|
দাস
|
বর্মণ
/
বর্মা
|
পাইন
|
দস্তিদার
|
শোলাকার
|
12
|
দেবশর্মা
/
শর্মা
|
সোম
|
পোদ্দার
|
চন্ডাল
|
বসু
|
খাস্তগীর
|
মালাকার
|
13
|
পিরালি
|
চন্দ্র
|
বসাক
|
মুচি
/
চর্মকার
|
বোস
|
সরকার
|
ঘরামী
|
14
|
পুতিতুন্ড
|
রায়
|
সাহা
|
ঘোষ
|
ঘোষ
|
বর্ধন
|
মিস্ত্রী
|
15
|
বন্দ্যোপাধ্যায়
/
ব্যানার্জী
|
রাহুত
|
বণিক
|
মোদক
|
সেন
|
মহলানবীশ
|
সূত্রধর/
সুতার
|
16
|
ভট্ট
/
ভট্টাচার্য্য
/
ভট্টাচার্য্যী
|
ভূঁইয়া
|
প্রমাণিক
|
শীল
(নাপিত)
|
দেব
|
পাঁটিকার
|
|
17
|
ভাদুড়ী
|
রাষ্ট্রী
|
সিকদার
|
দেববর্মা
|
রায়
|
দেওয়ান
|
বাড়ৈ
|
18
|
মুখোপাধ্যায়
/
মুখার্জী
|
ঘোষ
|
লাহা
|
হাওলাদার
|
কন্ঠ
|
হাজরা
|
|
19
|
মিশ্র
|
পাইক
|
বিশ্বাস
|
সরকার
|
মালী
|
||
20
|
মৈত্র
|
বালা
|
রাজবংশী
|
কেওট
|
মাঝি
|
||
21
|
মৌলিক
|
মন্ডল
|
মাহিয্য
/ মলো
|
সুর
|
পাখাধরা
|
||
22
|
রায়
নারায়ণ
|
চন্দ
|
কার্য্যী
|
||||
23
|
লাহিড়ী
|
কুন্ডু
|
দেওরী
|
||||
24
|
শাস্ত্রী
|
বিশ্বাস
|
ওঝা
|
||||
25
|
সরখেল
|
আইচ
|
পটুয়া
|
||||
26
|
সান্যাল
|
দাস
|
বৈদ্য
|
||||
27
|
মহাজন
|
গায়েন
|
|||||
28
|
পাটোয়ারি
|
||||||
29
|
ডাকুয়া
|
||||||
30
|
পাল
|
||||||
31
|
গোমস্তা
|
||||||
32
|
গদগদ
|
||||||
33
|
খাঁ
|
||||||
34
|
গুণ
|
||||||
35
|
জলদাস
|
||||||
36
|
জলধর
|
||||||
37
|
দাসগুপ্ত
|
||||||
38
|
পাজা
|
||||||
39
|
বর
|
||||||
40
|
বড়াল
|
||||||
41
|
বালা
|
||||||
42
|
ব্রজবাসী
|
||||||
43
|
রং
|
||||||
44
|
সাউদ
|
||||||
45
|
সাহানী
/
সোহানী
|
||||||
সূত্রঃ
বাংলা উইকিপিডিয়া
|
পরাশর
মুনি বলেন,
“গোপো
মালী তথা তৈলী তন্ত্রী মোদকো
বারুজী। কুলালঃ কর্ম্মকারশ্চ
নাপিতো নবশায়কাঃ।”
অর্থাৎ
গোপ,
মালী,
তিলি,
তাঁতি,
মোদক
(ময়রা),
বারুজী
(বারুই),
কুলাল
(কুম্ভকার),
কর্মকার
(কামার)
ও
নাপিত এই নয়জাতি নবশায়ক-জল-আচরণীয়
নয়টি বৈশ্যাচারপরায়ণ শাখাজাতি।
অচ্যুতচরণ
চৌধুরী রচিত,
শ্রীহট্টের
ইতিবৃত্ত (উত্তরাংশ)
থেকে
জানা যায়,
ইহারা
এক প্রকার শুদ্ধ শূদ্র,
যদিও
বৈশ্য শব্দে কৃষিব্যবসায়ী
এবং শিল্পব্যবসায়ী উভয়কেই
বুঝাইতে পারে,
তথাপি
নবশায়কগন উপবীত গ্রহন ও
বেদাধ্যান না করায় ইহাদিগকে
শূদ্র শ্রেনীতে পরিগনিত করা
হয়;
তবে
বিশেষত্ব এই যে ইহারা শুদ্ধ,
অর্থাৎ
ইহাদের স্পৃষ্ট গঙ্গাজল,
কুপজল
বা অন্য যে কোন প্রকার জল
ব্রহ্মণেরা ব্যবহার করিতে
পারেন। কার্য্যতঃ কিন্তু এই
নয় জাতির সকলকে সমান শুদ্ধ
মনে করা হয় না।
পুরোহিত
দর্পণের বিধান অনুযায়ী জাতিভেদ
প্রথা অনুসারে ব্রাহ্মণের
জন্য দশ দিন,
ক্ষত্রিয়ের
জন্য বার দিন,
বৈশ্যের
জন্য পনের দিন আর
শূদ্রের জন্য ত্রিশ
দিন অশৌচ পালন করতে হয়।
শ্রীশ্রীঠাকুর
অনুকূলচন্দ্র-এর
একটি বাণী দিয়েই লেখা শেষ
করবো-
হলায়ুধের
হল হেঁকে নেওরে আর্যকৃষ্টি-ঘোষী,
বিপ্র তোরা স্ফিত বক্ষে
ধ'রে দাঁড়া কোষা-কোষী;
বীর্যবক্ষী ক্ষত্র আবার
ধর রে দন্ড, ধর রে অসি,
বৈশ্য দাঁড়া পাচন হাতে
গোধন-ধান্যে দৈন্য ধ্বসি';
আর্য তোরা রুদ্র বেগে
আবার দাঁড়া দৃপ্ত রিঝে
রিক্তি মরণ মুক্তি-তপে
বীর্য্য-দাপে শূ্দ্র-দ্বিজে।
Joyguru dada .... Khub valo hoyeche lekhata....kintu amr akta question holo...onulom o protilom er khetre thakur jonmoved na kormoved er kotha mante boleche....seta aktu bolben....joyguru
ReplyDelete