The Web This Blog

Sunday, April 28, 2019

ধর্ষন ! RAPE ! ধর্ষন ! (সমাধান পর্ব)



গত পর্বের লেখার সূত্র ধরেই বলছি, সমাধান গুলো একান্তই আমার মত করে ভাবা তাই এর দ্বারা সমাজের যদি কিছুটা উপকার হয় তাহলেই আমার লেখার সার্থকতা।

নিয়ম রক্ষার্থে একটি গল্প দিয়েই শুরু করছি। আমার ঠাকুর দাদা (বাবার বাবা) স্বর্গীয় কালি পদ সরকার ছিলেন একজন লোক কবি, সাধক, যাত্রা শিল্পী ইত্যাদি। তিনি মৃত্যু বরন করেন ১৯৯৮ সালে। তিনি এই গল্পটা করেছিল। সত্য যুগে এক রাজা ছিলেন তার ছিল এক সুন্দরী স্ত্রী। তার স্ত্রীকে তিনি খুব ভালবাসতেন। সেই সুন্দরী স্ত্রী একদিন আবদার করল তাকে এমন একটি শাড়ী উপহার দিতে যা দেখে রাজ্যের সকল পুরুষ তার দিকে তাকিয়ে থাকে। রাজা স্ত্রীর মন রক্ষার্থে রাজ্যের সকল তাঁতীদের ডাকলেন এবং বললেন যে আমার স্ত্রীর মনের মত একটি শাড়ী বানাতে পারবে তাকে উপযুক্ত পুরষ্কার দেয়া হবে।

সকল তাতী তাদের সাধ্যমত শাড়ী বানিয়ে নির্দিষ্ট দিনে রাজ দরবারে হাজির হলো। রানীকে ডাকা হলো এবং তার পছন্দ মত শাড়ী বেছে নিয়ে তার কক্ষে যেতে বললেন রাজা। রানী একটি একটি করে শাড়ী পরলেন এবং রাজদরবারে এসে রাজাকে দেখালেন। রাজ দরবারের সকলে শাড়ী দেখে প্রসংশা করতে লাগলেন। সর্বশেষ শাড়ীটি পরে রানী রাজ দরবারে আসতে দেরি করছে দেখে রাজা লোক পাঠালেন দ্রুত আসতে। রানী দারোয়ানকে বললেন এই শাড়ী পরে আমি রাজদরবারে যাতে পারবো না। রাজা এই কথায় ভীষন রাগ করলেন এবং যে কোন ভাবেই হোক রানীকে আসার আদেশ করলেন। রানী খুবই লজ্জিত অবস্থায় সেই শাড়ী পরে রাজ দরবারে আসলেন। রানীকে দেখে সকল সভাসদ লজ্জায় মাথা নিচু করে রাখলেন, কারন সেই শাড়ী ছিল এতটাই পাতলা ও মসৃন যে রানীর সম্পূর্ণ শরীরের অঙ্গগুলো দেখা যাচ্ছে।

এই অবস্থা দেখে এই শাড়ির কারিগর তাঁতীকে রাজা হত্যার হুকুম দিলেন এবং শাড়িটি আগুনে পুরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিলেন। তাতী করজোড়ে তার অপরাধ জানতে চাইলেন এবং তার পরিশ্রমের শাড়িকে নষ্ট না করার জন্য অনুরোধ করলেন। তাতী বললেন আপনি আমাকে হত্যা করতে পারেন কিন্তু আমার পরিশ্রমের মূল্য আমাকে দিতেই হবে। রাজা তখন তাঁতীকে বললেন, ঠিক আছে তোমার এই পরিশ্রম বৃথা যাবেনা, পৃথিবী ধংসের শেষ জামানায় ঘোর কলি যুগে তুমি তোমার পরিশ্রমের মূল্য পাবে। শেষ জামানার সময় মেয়েরা পুরুষদের সামনে তাদের শরীর দেখাতে পারাকে প্রশংসার ও গৌরবের মনে করবে এবং তারা এই ধরনের পোশাকই পরিধান করতে স্বাচ্ছন্দবোধ করবে। তাদেরকে দেখে সভ্য সমাজের পুরুষরা লজ্জায় মুখ লুকিয়ে থাকবে। এই বলে সেই শাড়িটি আগুনে পুরিয়ে ফেলা হলো এবং তাঁতীকে মুক্ত করে দেয়া হলো।

পাঠক এবার মিলিয়ে দেখেন তো আপনার চারপাশেই এমন পুরুষ তাঁতীরা এমনই পোশাক বানাচ্ছে এবং সেই পোশাক পরেই মেয়েরা লজ্জাহীন ভাবে এই সমাজে ঘুরে বেড়াচ্ছে কিনা?
একটি মেয়েই মা হোন, সে আবার বোন, কখনো বা স্ত্রী রূপে পুরুষের জীবনে আসে। যারা একটি মেয়েকে ধর্ষন করে তাদের কাছে প্রশ্ন তুমি কি তোমারই মা, বোন বা স্ত্রী কে ধর্ষন করছো????

নারী নির্যাতন সম্বন্ধে কথা উঠলে, তার সমাধান সম্পর্কে শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র একদিন যা বলেছিলেন তার ভাবার্থ এমন যে, নারী যতই দুর্বল হোক না কেন সৃষ্টিকর্তা তাদের হাতে এমন এক রক্ষাকবচ দিয়ে দিয়েছেন যে পুরুষ যতই কামোন্মত্ত হয়ে তার সর্বনাশ সাধনে অগ্রসর হোক না কেন, সে (নারী) যদি তার সতীত্বের তেজ নিয়ে জোরে তাড়া দিয়ে কোনভাবে তাকে একটা মানসিক আঘাত (Mental shock) দিতে পারে, তখনই সে নিরস্ত হতে বাধ্য-আর এগুতে সাহস পায় না।

যখনই দেখিবে
         পুরুষ-সংস্রব
তোমার
        ভাল লাগিতেছে-
অজ্ঞাতসারে, কেমন করিয়া,
পুরুষের ভিতর যাইয়া
আলাপ আলোচনায় প্রবৃত্ত হইতেছ-
বুঝিও-
       পুরুষাকাঙ্ক্ষা
জ্ঞাতসারেই হোক আর অজ্ঞাতসারেই হোক
তোমার ভিতর মাথা তোলা দিতেছে;-
         যদিও
স্ত্রী-পুরুষ উভয়েরই প্রকৃতিগত একটা ঝোঁক
উভয়ের সংস্রবে আসা-
তথাপি দূরে থাকিও,
নিজেকে সামলাইও-
          নতুবা
        অমর্যাদার
তোমাকে কলঙ্কিত করিতে
কিছুই লাগিবে না।

যতটুকু আমার জানা আছে সকল প্রধান ধর্মেই মেয়েদের যেমন সম্মান দেয়া হয়েছে, তেমনি তাদের শালীনতার মধ্যে থাকতে বলা হয়েছে।
রামায়ন-এ আমরা দেখতে পাই দেবী সীতা যখন বনবাসে ছিলেন, তখন একদিন লক্ষন তাকে একটি রেখা বা সীমানা দিয়ে যান এবং বলে যান যেন কোন অবস্থাতেই তিনি যেন এই রেখা পার না হন। ঘটনাক্রমে রাবনের চক্রান্তে দেবী সীতা সেই লক্ষন রেখা পার হন এবং বাকি ইতিহাস সকলেই জানেন।
বিভিন্ন সময় বিভিন্ন হুজুরের কাছ থেকে ওয়াজে শুনেছি, ইসলাম ধর্মে মেয়েদের সকল সময় পর্দার মধ্যে থাকতে বলা হচ্ছে, বিবাহিত নারীর একটি চুল যেন স্বামী ব্যতিত অন্য কেও দেখতে না পারে এমন পোশাক পরিধান করার কথা বলা হচ্ছে। এটা একটি সমাধানের পথ হতে পারে।

হিন্দু ধর্মে বিবাহিত নারীরা শাখা, সিঁদুর পরে যেটা তার স্বামী জীবিত আছে সেটা বুঝায়। এখনকার নারীরা এই নিয়মকে কুসংস্কার মনে করছে। যার কারনে কে বিবাহিত আর কে অবিবাহিত তা বুঝা যায় না। এটাও একটি সমাধানের পথ হতে পারে।

তোমার চাউনি, চলা, হাসি, কথা,
আচার, ব্যবহারকে
এমনতর ভাবে চরিত্রগত করিতে চেষ্টা করিবে-
যাহাতে সাধারণতঃ
পুরষ-মাত্রেরই
ভক্তি, সম্ভ্রম, শ্রদ্ধা আকর্ষণ করে;-
তাই,
যখনই দেখিবে
কোন পুরুষ
তোমার প্রতি
কামলোলুপ ইঙ্গিত করিতেছে,
তখনই, তোমার চরিত্রকে
তন্ন তন্ন করিয়া খুঁজিয়া দেখিও
গলদ কোথায়-
আর, কেন এমন হইতেছে
যদিও দুর্বলচিত্ত পুরুষ এমনই করিয়া থাকে,
কিন্তু
তোমার প্রতি ভয় ও সম্ভ্রমই
ইহার উত্তম প্রতিষেধক।

কিছুদিন আগে দেখলাম মেয়েদের জন্য একটি টিশার্ট বের হয়েছে তাতে লেখা “গা ঘেষে দাড়াবেন না” তার কিছু দিন পরে আবার ছেলেদের জন্য আরেকটি টিশার্ট বের হয়েছে তাতে লেখা “গা ঘেষে দাড়াবেন না, বড় চুল দেখলে স্ত্রী সন্দেহ করে”। এভাবে হয়ত প্রতিবাদ করা যেতে পারে কিন্তু সমাধান হবে কি? যতদিন পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় ভাবে নারী পুরুষ উভয়কেই একে ওপরের প্রতি শ্রদ্ধা, ভালবাসা, মূল্যবোধ না শিখানো ততদিন হয়ত এর থেকে আমরা মুক্ত হব না।

সর্বশেষে বলতে চাই একমাত্র মানুষ (নারী ও পুরুষ) যখন তার নিজ নিজ ধর্মের নির্দেশগুলো সঠিক ও যুগোপযোগিতার সাথে পালন করবে তখনি কেবল এই ধরনের কর্মকান্ড থেকে সমাজ রক্ষা পাবে।

1 comment:

  1. হূমম বুঝলাম!ধর্ষণের যে সমাধান আপনি বাতলেছেন তা গ্রহণযোগ্য!! কিন্তু কিউরিয়াস মাইন্ড ওয়ান্টস টু নো, কোনো ছেলে যখন ধর্ষণের শিকার হয় তখন কোন পোশাক দায়ী? কোনো দুই তিন বৎসরের বাচ্চা যখন ধর্ষণের শিকার হয় তখন কোন তাঁতির পোশাক দায়ী? এই প্রশ্নের উত্তর আসে নি আপনার লেখায়!!!

    ReplyDelete