~~ সূচনা ~~
~~
প্রথম
পাতা~~
এখন
আসা যাক গল্পের প্রধান চরিত্রের
দিকে। মতি লাল শীল এর পঞ্চম
সন্তান আন্না রানী শীল,
জন্ম
আনুমানিক ০৩ মে ১৯৬৮ ইং,
শুক্রবার।
গ্রাম্য পরিবেশে বড় হতে থাকে
আন্না রানী। ৬-৭
বছর বয়সে তাকে বিদ্যালয়ে ভর্তি
করা হয় বাড়ির পাশেই একটি সরকারী
প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। সামাজিক
কারন ও পারিবারিক কারনে লেখাপড়া
বেশি আর করা হল না। সেই সময়ে
নারীদের লেখাপড়া অবহেলার
চোখই দেখা হত।
আন্না
রানী ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে,
ঘরের
কাজে মাকে সাহায্য করতে থাকে।
এরই মধ্যে তার বড় দাদা দিদিদের
বিয়ে হয়ে যায়। এখন তার বিয়ের
কথা আসতে থাকে নানান জায়গা
থেকে। বাবা মা ও কিছুটা চিন্তিত
মেয়ের বিয়ে নিয়ে। বিভিন্ন
জায়গা থেকে বিয়ের প্রস্তাব
আসলেও মতি লাল শীলের কাউকেই
যেন মেয়ের স্বামী হিসেবে
পচ্ছন্দ হচ্ছিল না।
এমনি
করে কয়েক বছর কেটে যায়। একদিন
হঠাৎ করে এক আত্নীয় আসে তাদের
বাড়িতে,
সাথে
একজন অপরিচিত ছেলে। আত্নীয়টি
মতি লাল বাবুকে ঐ অপরিচিত
ছেলের পক্ষ হয়ে তার ছোট কন্যা
আন্না রানীর স্বামী হিসাবে
প্রস্তাব করে। ছেলেটিকে দেখে
মতি লাল আগ্রহ করে সব জিজ্ঞাসা
করে,
কি
করো?
কোথায়
থাকো?
পরিবারে
কে কে আছে?
ইত্যাদি।
ছেলেটি
তখন একটি সেলুনে কাজ করত।
তাদের গ্রামের বাড়ি ফরিদপুর
জেলাধীন বোয়ালমারী উপজেলার
কেওয়াগ্রাম নামক এক সাধারন
গ্রামে। তারা পাঁচ ভাই ও তিন
বোন। ভাই দের মধ্যে সবার বড়
এবং তার এক বড় বোন আছে,
যার
পাশের গ্রামে বিয়ে হয়েছে এবং
একটি মেয়ে আছে। বাবা চাকরি
করতেন এখন তেমন কিছু করে না।
ঢাকায় মা ও দুই ভাই থাকে বাকিরা
গ্রামে বাবার সাথে থাকে।
সব
কথা শুনে মতি লাল বাবু তার
অভিবাবকদের আসার কথা বলে।
ছেলেটি ঢাকায় চলে আসে এবং সব
কথা তার মার কাছে বলে। তার মা
তখন গ্রামে তার স্বামীর কাছে
খবর পাঠায় ঢাকায় আসার জন্য। কালি
পদ সরকার ও মিনতি রানী সরকার
এর আট সন্তান। এই পরিবারটিও
আলিমনঃ গোত্রের কায়স্ত শীল।
যথাক্রমে আরতী রানী,
রবীন্দ্র
নাথ,
বীরেন্দ্র
নাথ,
সান্তনা
রানী,
অসিম
কুমার,
কার্তিক
চন্দ্র,
চায়না
রানী ও বিজয় কুমার। কালি পদ
বাবুর দ্বিতীয় সন্তান রবীন্দ্র
নাথের সাথেই মতি লাল বাবুর
মেয়ে আন্না রানীর সাথে বিয়ের
কথা চলছে।
ইতিহাস
থেকে যতটুকু জানা যায় কালি
পদ সরকার এর দৈবিক কোন এক অজানা
কারনে তাদের পুরুষ সদস্যরা
বেশী দিন বাঁচতো না। তাদের
বংশের কোন ছেলে বিবাহযোগ্য
হলেই তাদের বাবা মারা যেত।
কালি পদ বাবু ছিলেন একজন মা
কালী সাধক,
কবিরাজ
ও যাত্রা শিল্পী। তিনি অনেক
সাধন ভোজন করে তাদের বংশের
এই অকাল মৃত্যু রোধের পথ খুজতে
থাকে।
কালি
পদ বাবুর এক কাকাতো ভাই ছিলেন
অমর চন্দ্র শীল যিনি শ্রীশ্রীঠাকুর
অনুকূলচন্দ্রের পবিত্র পাঞ্জা
ধারী সহ-প্রতি
ঋত্বিক ছিলেন। তিনি তার পরিবারের
সকলকে সৎ মন্ত্রে দীক্ষা দান
করে। যার কারনে তাদের পরিবারের
কাহারো আর অকাল মৃত্যু হয়নি।
শ্রীশ্রীঠাকুরের
একটি বানী আছে,
সদদীক্ষা
তুই এক্ষুণি নে
ইষ্টেতে
রাখ সম্প্রীতি
মরণ
তাড়ন এ নাম জপে
কাটেই
অকাল যমভীতি।
কালি
পদ বাবু গ্রাম থেকে ঢাকায় আসে
ছেলের জন্য বৌ দেখতে। কালি
পদ বাবু ও তার অন্য চার জন
ছেলেকে নিয়ে গেলেন কন্যা
দেখতে। ঢাকা থেকে যেতে যেতে
সেই দিন রাত হয়ে গেল কারন তখন
লঞ্চে যেতে হত ডেমরা ঘাট থেকে।
পরদিন সকালে তারা কন্যা দেখার
পর্ব শেষ করলো এবং দুই অভিবাবকদের
সম্মতিক্রমে বিবাহের দিন
ধার্য করা হলো।
মতি
বাবু তার মেয়ে আন্না রানী কে
বুঝায় বড় পরিবার সবাই তোকে
খুব ভালবাসবে। সবাইকে ছোট
ভাই বনের মতো ভালবাসতে। আন্না
রানী সেই ভাবেই বাকি জীবন চলার
চেষ্টা করেছে। ননদ-দেবরা
ও তাকে বড় বৌদি হিসাবে যথেষ্ট
শ্রদ্ধা করে।
~~ দ্বিতীয় পাতা ~~
No comments:
Post a Comment