কিছুদিন
যাবত এই বিষয়টি আমাদের সমাজে
ব্যাধির মত হয়ে যাচ্ছে। ধর্ষন কি,
কত
প্রকার ইত্যাদি আমরা উইকিপিডিয়াতে
জানতে পারি। আজকে
আমি এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা
করার মানে,
হয়ত
আমার একার মাধ্যমে এই ব্যাধি
ঠিক করা সম্ভব নয় কারন আমার
এই লেখাটা একজন ক্যানসার
রোগীকে এক ফোটা ঔষধ দেয়ার মত।
আমার
এই লেখাটি সম্পূর্ন আমার মতো
করে লেখা,
যদি
কোন ব্যাক্তি,
প্রতিষ্ঠান
ও ধর্মীয় ভাবে কেহ কষ্ট পেয়ে
থাকেন সেটা হবে একান্তই তার
ব্যাক্তিগত,
কারন
কাউকে কষ্ট বা হেয় করার উদ্দেশ্যে
আমি এটা লিখছি না।
একটি
প্রতিকী গল্প দিয়ে আমার এই
লেখা শুরু করতে চাই,
একটি
গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত ব্যক্তির
একটি আখ ক্ষেত ছিল। জমির মালিক
একদিন ক্ষেতে যেয়ে দেখে কয়েকজন
গরিব লোক সাথে তার এক দূর
সম্পর্কের ভাই মিলে আখ তুলে
খাচ্ছে। জমির মালিক তার দূর
সম্পর্কের ভাই কে ডেকে বলল
কিরে কি ব্যাপার তুই আমার ভাই
তুই আখ খাবি খা,
এই
জন্য গ্রামের গরিব লোক নিয়ে
খাবি। তারপর দুই ভাই মিলে সেই
গরিব লোকদের মেরে বের করে দিল।
কিছুদিন পরে সেই দূর সম্পর্কের
ভাই একা এসে আবার আখ খেতে লাগলো,
এবার
জমির মালিক একাই তার ভাইকে
মেরে বের করে দিল।
গল্পের
মূল কথাঃ-
যারা
খারাপ বা অসৎ লোকের সঙ্গ দিবে
তার একদিন না একদিন বিপদে
পরবেই।
এখন
আসল বিষয়ে যাই,
কিছুটা
পিছন থেকে শুরু করতে চাই,
১৯৯৫
সালের ২৪ শে আগস্ট,
অন্যান্ন
দিনের মতই এই দিনটি শুরু হয়েছিল। দিনাজপুরে
ইয়াসমিন নামের এক মেয়েকে ধর্ষন
করে কিছু পুলিশ সদস্যরা। আমার
যতটুকু মনে পরে এটা এমন একটা
ঘটনা যেটা সারা বাংলাদেশে
সারা ফেলে দিয়েছিল। সিরাজগঞ্জে
২০০১
সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের
পর ১৪ বছরের কিশোরী পূর্ণিমা
রানী শীল ওপর চালানো হয় পাশবিক
নির্যাতন। এমনি
করেই প্রতিদিন,
প্রতি
মাস কিংবা প্রতি বছর কোথা না
কোথাও এমন ঘটনা ঘটেই চলচ্ছে,
এটা
যে বাংলাদেশের মত গরিব দেশে
হয় তা কিন্তু নয়। পৃথিবীর
বিভিন্ন প্রান্তেই বা দেশে
ঘটে চলেছে।
এই
সুন্দর পৃথিবীতে সৃষ্টিকর্তা
মানুষকে মূলত দুই ভাগে সৃষ্টি
করেছেন নারী ও পুরুষ। তাদেরকে
ধর্মীয় ও সামাজিক ভাবে এক সাথে
বসবাস করার জন্য বিবাহ বন্ধনে
আবদ্ধ হতে হয়। তারপর তাদের
শারিরিক মিলনের ফলে জম্ম নেয়
একটি নতুন জীবন বা মানুষের।
একজন বাবা ও মায়ের সেই বিশেষ
মূহুর্তের মানসিকতার ও
চিন্তাভাবনার উপর নির্ভর করে
একজন ছেলে বা মেয়ের জীবন,
চরিত্র,
ভবিষ্যত
সকল কিছু। আমি বিয়ের আগে কয়েক
জন মেয়েকে ভাল বাসতাম,
আমার
স্ত্রী হয়তো একজন কে ভালবাসত।
বিয়ের পরেও যদি তাদের সেই
পূর্বের সম্পর্ক থেকে থাকে
তাহলে সমাজের কি হবে তা দেখাই
যাচ্ছে। যার কারনে দেশের
জনসংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে
কিন্তু মানুষ বাড়ছে না।
বেশ
কিছুদিন যাবত নুসরাত নামের
একজন মাদ্রাসা ছাত্রীর জীবনে
যে ঘটনা ঘটেছিল তা নিয়ে মহল্লার
ছোট চায়ের দোকান থেকে শুরু
করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী
পর্যন্ত সবাই তৎপর। এরপর কি
হয়,
বিচার
পাবে কিনা,
যে
বা যারা এই অমানবিক কাজের সাথে
সংস্লিষ্ট তারা শাস্তি পাবে
কিনা ইত্যাদি ইত্যাদি। ধর্ষন
নানা ভাবে নানা কারনে হতে
পারে,
এক
গবেষনায় দেখা গেছে নারীরা
তার পরিচিত,
কাছের
মানুষ বা আপন মানুষের কাছ
থেকেই বেশী ধর্ষনের শিকার
হয়। এই ঘটনা গুলো বেশী ঘটছে
কিছুটা পারিবারিক শিক্ষা,
সামাজিক
অবক্ষয়,
উচ্চাকাঙ্ক্ষার
ফলে। তাই মুনীর চৌধুরীর সেই
লেখা সেই লাইনটি মনে পরছে,
“মানুষ
মরে গেলে পচে যায়,
বেঁচে
থাকলে বদলায়,
কারণে-অকারণে
বদলায়”। মাঝে মাঝে ভাবি আমি
যদি নুসরাত হতাম আর যদি বেচেই
যেতাম তাহলে কি সমাজ,
প্রধানমন্ত্রী
কি আমার পরিবারের এতটা দেখা
শুনা করতেন??
তাহলে
কি সয়তান সিরাজউদ্দৌলার কি
সাজা হতো??
এখানে
পরমদয়াল শ্রীশ্রীঠাকুর
অনুকূলচন্দ্র,
সত্যানুসরণ-এ
বলছেন,
“জগতে
মানুষ যত-কিছু
দুঃখ পায় তা'র
অধিকাংশই কামিনী-কাঞ্চনে
আসক্তি থেকে আসে,
ও
দুটো থেকে যত দূরে স'রে
থাকা যায় ততই মঙ্গল। কামিনী-কাঞ্চন
সম্বন্ধীয় যে-কোন
রকম আলোচনাই ওতে আসক্তি এনে
দিতে পারে। ও-সব
আলোচনা থেকে যত দুরে সরে থাকা
যায় ততই ভাল।”
গত
১ লা বৈশাখ ১৪২৬ রোজ রবিবার
বিকালে আমাদের বুড়িগঙ্গা
নদীর ধারে একা হাট ছিলাম। দেখি
৪-৫
জন ছেলে ও একটি মেয়ে ২০-২২
বছর হবে গল্প করছে,
পোষাক
ও চেহারা দেখে মনে হল নিম্নে
মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলে মেয়ে।
পাশ দিয়ে হাটতে হাটতে যতটুকু
শুনলাম তাদের আলোচ্য বিষয় কি
ভাবে মেয়েদের ধর্ষন করে।
কিছুটা অবাক হলাম বটে। এখন
প্রশ্ন হচ্ছে ঐ ছেলে গুলো যদি
রাতে মেয়েটিকে নিয়ে ধর্ষন
করে তাহলে এই দায় কি আমাদের
সমাজের নাকি রাষ্ট্রের নাকি
পরিবারের।
আমি
বাসায় গেলে সাধারনত টিভিতে
খবর দেখি না,
কারন
এমন কোন দিন নাই যেখানে সকল
গনমাধ্যম কোন কোন না দূর্ঘটনা,
ধর্ষন,
হত্যা
ইত্যাদির খবর প্রচার করে না।
যে ঘটনা মানুষ নিয়মিত শুনে
বা দেখে তার প্রতি মানুষের
অবচেতন মনে যাবেই এটাই মনের
ধর্ম। তাই সকল ধর্মে ঈশ্বরের
উপাসনা করা,
ভাল
চিন্তাভাবনা করা,
ভাল
কাজ কারার,
ভাল
লোকের সঙ্গ কারার কথা বলা
হয়েছে।
সমাধান
কি আছে????
জানতে
চাই,
সমাজ,
দেশ,
গবেষক,
সাধারন
মানুষ ও দেশ পরিচালকদের কাছ
থেকে। কি হবে আমারা যারা এখনও
বেচে আছি এই সমাজে বা পৃথিবীতে।
No comments:
Post a Comment