~~ পঞ্চম পাতা ~~
~~
ষষ্ঠ
পাতা ~~
সময়
আর জীবন তার গতিতে চলতে থাকে।
রীতা রানীর সন্তানরাও ধিরে
ধিরে বড় হতে থাকে। একে একে
অন্যান্ন দেবরদেরও বিয়ে হয়ে
যায়। সংসার যত বড় হয় ততই ঝগড়া
ঝাটি,
পারিবারিক
কলহ বারতে থাকে আর একে একে
সবাই তাদের স্ত্রী সন্তানদের
নিয়ে আলাদা সংসার শুরু করে।
থেকে যায় শুধু বিজয় কুমার নামে
সবার ছোট দেবর ও তার বৌ। দুইটি
কলস যেমন এক সাথে থাকলে ঠুকা
ঠুকি লাগে,
তেমনি
পাঁচ ছেলের বৌ এক সাথে থাকলে
তাদের মধ্যেও হয়।
দোষ
গুন নিয়েই তো জীবন কে ভাল কে
মন্দ সেটা ঈশ্বরই যানেন।
কিন্তু মানুষ যা দেখে তার উপর
দেখেই সব বিচার করতে চায়।
কিন্তু কখনো কালী পদ ও মিনতী
রানীর ছেলেদের মধ্যে ঝগড়া
করতে কেও দেখেনি। মিনতী রানী
অনেক সংগ্রাম করে তার ছেলেদের
মানুষ করেছেন। আজ সবাই যার
যার মত ভাল আছেন তাদরে সংসার
নিয়ে।
ইংরেজী
১৯৯৭ সাল রীতা রানীর বড় মেয়ে
মাধবী এসএসসি পরীক্ষায় ফেল
করলো তাই সবার মন খারাপ। রবী
বাবু সবসময় অতিরিক্ত আশাবাদি
একজন লোক তাই হয়তো ঈশ্বর তার
সকল আশাই এইভাবে নষ্ট করে দেয়।
এরপর ছেলের পালা ১৯৯৮ সালে
সে এসএসসি পরিক্ষা দিবে ছেলে
যদি পাশ করে তাহলে রবী বাবুর
কষ্ট কিছুটা কমবে। তিনি গর্ব
করতে থাকে ছেলেকে,
ছেলে
তার বিজ্ঞান বিভাব নিয়ে পড়ে
সে পাশ করবেই।
পাশ
করলে সকলকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি
যাবে এবং মা কালীর পুজা দিবে
এমন একটি মনের ইচ্ছা প্রকাশ
করেন রবী বাবু। কিন্তু ভাগ্য
বলে কথা,
ছেলে
খুব ভাল ভাবে পরীক্ষা শেষ
করলো,
শিক্ষকরাও
আশাবাদী রাম কৃষ্ণ প্রথম
বিভাগে পাশ করবে। সেখানোও
বিধি বাম,
মাত্র
সাত নম্বরের জন্য সে জীববিজ্ঞানে
ফেলকরে। সকলকে নিয়ে রবীবাবুর
আর গ্রামে যাওয়া হলো না।
এদিকে
কালী পদ বাবু ১৭ই জানুয়ারি
১৯৯৯ রবিবার দুপুর ২টা অনেকদিন
শ্বাসকষ্টে ভুগে মারা গেলেন।
হাসপাতাল আর বাড়ী রীতা রানী
ও অন্যান্ন ছেলের বৌরা,
নাতি-নাতনীরা
তাকে সেবা যত্ন করেছেন অনেক।
কালীপদ বাবুর অনেক ইচ্ছা ছিল
তিনি মারা গেলে যেন গ্রামের
বাড়িতে দাহ করা হয়। সেই মোতাবেক
তার চতুর্থ ছেলে কার্তিক
চন্দ্রের চেষ্টায় তাকে নিয়ে
যাওয়া হয় তাদের গ্রামের বাড়ী
ও সেইখানেই তাকে ধর্মীয় আচার
মেনে তাকে দাহ করা ও পরবর্তীতে
শ্রাদ্ধের কাজ শেষ করা হয়।
এইদিকে
১৯৯৯ সালে সরকার নিয়ম করে যারা
এক বিষয়ে এসএসসি পরীক্ষায়
খারাপ করেছে তারা সেই বিষয়েই
পরীক্ষা দিতে পারবে। রাম কৃষ্ণ
এই সুজোগটাই মনে মনে চাচ্ছিল।
জীববিজ্ঞানে পরীক্ষা দিয়ে
১৯৯৯ সালে সে এসএসসি পরীক্ষা
দিয়ে পাশ করে।
সংসারের
খরচ দিন দিন বাড়তেই থাকে তাই
রাম কৃষ্ণ পরীক্ষা শেষ করেই
বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে শিক্ষকতা
শুরু করে,
এতে
সবচেয়ে বড় ভূমিকা ছিল তার
ঠাকুরমা মিনতী রানীর। তারই
পরিচিত একজনের মেয়েকে পড়ানোর
মাধ্যমে শুরু হয় রাম কৃষ্ণের
নতুন কর্ম জীবন।
দিন
যেতে থাকে ছোট মেয়ের এসএসসি
পরীক্ষা দেবার পালা। বড় মেয়ে
কলেজে ভর্তী হয়েছে আর রাম
কৃষ্ণ কোন কলেজে ভর্তী হবে
তা খুজছে। রীতা রানীর ছোট দেবর
বিজয় কুমার তার ভাতিজা ও
ভাতিজীদের অনেক আদর করতেন।
সকলের লেখা পড়া করার পিছনে
তার সবচেয়ে বেশী ভূমিকা ছিলো।
বড়
মেয়ে মাধবী রানী বিয়ে ঠিক
তাদের পরিচিত পাশের গ্রামে
১৩ আগষ্ট ২০০২ মঙ্গলবার,
বিয়ে
হয়ে গেল মাধবী রানীর। কষ্ট
যেন কমেই না তাদের জীবনে। সেই
ঘরে এখন দুই ছেলে।
শিখা
রানী আদরের ছোট মেয়ে বিয়ে হলো
০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১১ বুধবার।
এখন তাদের ঘরে দুই মেয়ে।
একমাত্র
ছেলে রাম কৃষ্ণ বিয়ে হয় ১১
আগস্ট ২০১৩ রবিবার,
সেখানে
এক মেয়ে। এদিকে মিনতী রানী
০৮ জানুয়ারী ২০১৫ বৃহস্পতিবার
মারা গেলেন। চলে গেলো এই
পরিবারের সকল অভিবাবক।
আর
কত কষ্ট বা সংগ্রাম করলে একজন
নারী মা হতে পারেন?
পারিবারিক
কারনেই আমাকে দ্রুত লেখাটা
শেষ করতে হলো। অনেক না বলা
কথাই রয়ে গেল মনের গভীরে। মাকে
নিয়ে তার জীবনের অনেক কথাই
অসমাপ্ত রয়ে গেল হয়তো অন্যকোন
দিন অন্যকোন ভাবে আমাকে লেখাটা
শেষ করতে হবে।
শ্রীশ্রীঠাকুরের একটি বানী দিয়ে লেখাটা শেষ করতে ইচ্ছা করছে,
কাউকে আপন করতে হ'লেই
আপন আপন ভাববি তায়
সপক্ষে তার করবি কইবি
দেখবি দোষ তার উপেক্ষায়।
~~ সূচনা ~~
~~ প্রথম পাতা ~~
~~ দ্বিতীয় পাতা ~~
~~ তৃতীয় পাতা ~~
~~ চতুর্থ পাতা ~~
~~ পঞ্চম পাতা ~~
~~ ষষ্ঠ পাতা ~~
চলবে ….....................
No comments:
Post a Comment