~
শুরু পাতা ~
~
শেষ
পাতা ~
ইংরেজী
২০০৩ সাল ঢাকার গেন্ডারিয়াতে
আসে শ্রীশ্রীঠাকুরের এক ভক্ত
প্রহল্লাদ পোদ্দার,
জগন্নাথ
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। বয়সে
কিছুটা ছোট হলেও গুরু ভাই
হিসাবে তার কাছে অনেক কিছুই
শেখার আছে। আমরা কয়জন আমি,
চন্দন,
প্রহল্লাদ,
মিলন
দেব,
বলরাম
ও বিধান কাকা প্রায় সময় একসাথে
চলাফেরা ও শ্রীশ্রীঠাকুরের
কাজ করতাম। শাখারী বাজার
মন্দিরে নিয়মিত যাতায়াত,
উৎসব
গুলোতে অংশগ্রহন বিভিন্ন
পারিবারিক অধিবেশনে যাতায়াত
এভাবেই দিন কাটতে থাকে। এভাই
গেন্ডারিয়ার অনেক গুরুভাইয়ের
পরিবারের সাথেও পরিচয় এবং
সংক্ষতা হতে থাকে। গেন্ডারিয়া
ও এর আশেপাশের এলাকায় কিভাবে
পারিবারিক অধিবেশন করা যায়
এই চিন্তা করতে করতে প্রহল্লাদার
উদ্যগেই আমারা গেন্ডারিয়াতে
পারিবারিক অধিবেশন শুরু করি।
তারপর ধিরে ধিরে সেটা শ্রীশ্রীযমুনা
মাঈ আশ্রমে নিয়মিত শুক্রবার
সন্ধায় করা হয়ে আসছে।
ইংরেজী
২০০৬ সালে আমার গাজিপুরের
একটি গার্মেন্টসে চাকরি হয়।
এক বছর অনেকটাই সময় দিতে পারতাম
না ঠাকুরের কাজে। তখন প্রহল্লাদার
উদ্যগেই আমরা শুরু করলাম
নিয়মিত প্রার্থনা করার উদ্যোগ
আমরা যেখানেই থাকিনা কেন আমরা
একটা প্রার্থনার সময় তালিকা
করেছিলাম। ভোরে ও সন্ধায় আমরা
সঠিক নিয়মে প্রার্থনা করছি
কিনা এবং কত সময় ধ্যান করতাম
তা লিখে রাখতাম। এবং ভোরে উঠে
আমরা একে ওপরকে মিসড কল দিতাম
কে কখন উঠলো তা যানানোর জন্য।
শ্রীশ্রীঠাকুর
সত্যানুসরণের বলেছেন,
“একটা
চাইতে গিয়ে দশটা চেয়ে ব'স
না,
একেরই
যাতে চরম হয় তাই কর,
সকলগুলিই
পাবে।” আমরা তার কাছে চাইতেই
যানি না,
কি
চাইতে হয়। তাই জীবনে বার বার
ভুলপথে চলে যাই। আমি মনে মনে
পরমপিতার কাছে চাইতাম ঠাকুর
আমাকে ঢাকায় একটা চকরির ব্যবস্থা
করে দাও,
ঠাকুর
আমার প্রার্থনা গ্রহন করলেন।
২০০৭ সালে আমার ঢাকার মগবাজারে
বাংলাদেশের একটি বিখ্যাত
সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠানে
চাকরি হয়। আমার চাওতে হয়তো
পরমদয়ালের কাজ করবো এমন
প্রার্থনা ছিল না,
যার
কারনে সেখানে সপ্তাহে দুই
দিন ছুটি ছিল শনিবার ও রবিবার।
যার কারনে শুক্রবার গুলোতে
মন্দির ও প্রার্থনা থেকে আবারও
বনশ্চিত হলাম।
যুগ-পুরুষোত্তম
শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেব
ভক্তদের বলতেন মা-র
কাছে চাইতে হয় একবারে,
বলতে
হয় মা আমি যেন সব সময় নাতি-পুতি
নিয়ে সোনার থালায় ভাত খেতে
পারি। মানে এক চাওতেই সব বলতে
হবে। মগবাজার চাকরি করাকালীন
সময় জীবনে অর্থ ও সম্মান এসেছিল
কিন্তু ঠাকুরের কাজ করে জীবনকে
ধন্য করা থেকে অনেকটাই বনশ্চিত
হয়েছিলাম।
ইংরেজী
২০১১-২০১২
সাল শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র
সৎসঙ্গ,
হেমায়েতপুর,
পাবনা
থেকে বেরিয়ে এসে সাংগঠনিক
কারনে পূজনীয় অধ্যক্ষকে নিয়ে
তৈরি হল নতুন একটি সংগঠন
প্রিয়পরম শ্রীশ্রীঠাকুর
অনুকূলচন্দ্র সৎসঙ্গ ফাউন্ডেশন।
অনেকে বুঝে,
অনেকে
কিছু স্বার্থ নিয়ে,
অনেকে
শ্রীশ্রীঠাকুর পরিবারকে
ভালবেসে নতুন ভাবে চলা শুরু
করলো। এই দুর্যোগকালীল সময়ে
পরিচয় আমার খুব ভাললাগা একজন
মানুষ সুমন বিকাশ দাস দাদার
সাথে। ২০০৫ সাল থেকে ২০১২ সাল
প্রর্যন্ত সৎসঙ্গ গেন্ডারিয়ার
শাখার আমি দপ্তর সম্পাদক
হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছি।
কমিটি বিলুপ্ত হবার পর ২০১২
সাল থেকে এখন প্রর্যন্ত
কোষাদক্ষের দায়িত্ব পালন করে
আসছি।
ইংরেজী
২০১২ সালে প্রিয়পরম শ্রীশ্রীঠাকুর
অনুকূলচন্দ্র সৎসঙ্গ ফাউন্ডেশন,
ঢাকা
এর উদ্যগে শ্রীশ্রীঠাকুর
অনুকূলচন্দ্রের ১২৪ তম শুভ
আবির্ভাব-বর্ষ-স্বরণ
মহোৎসব পালন করা হয় ফজলুল হক
মহিলা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ,
গেন্ডারিয়া-তে।
তখন আমাকে দায়িত্ব দেয়া হয়
গেন্ডারিয়ার গুরুভাইদের কাছ
থেকে ইষ্টভৃতি সংগ্রহ করার।
ঐ উৎসব থেকেই ইষ্টভৃতি সংগ্রহের
কাজ শুরু হয়। প্রথম দিকে আমার
পরিবার ও অন্যান্ন কাকাদের
কাছ থেকে তারপর ফরিদাবাদ,
গেন্ডারিয়া
ও সুত্রাপুরের কিছু গুরুভাইরা
এগিয়ে এসেছিল এই মহান কাজে
আমাকে সাহায্য করতে। অনেকেই
স্বইচ্ছায় ইষ্টভৃতি জমা দিতে
থাকে আমাদের ফাউন্ডেশেনে।
ইংরেজী
২০১৬ সালের প্রথম দিক থেকে
শুরু হয় bKash
ও
মানি ওর্ডারের মাধ্যমে ইষ্টভৃতি
জমা দেওয়ার নিয়ম। তখন bKash
এর
দায়িত্ত্বটি আমার উপর পরে
এখন পর্যন্ত সেটা পালন করছি।
২০১৩ সালের দিকে শ্রদ্ধেয়
সহ-প্রতি
ঋত্বিক এক অধিবেশনে নকুল কিশোর
দাস দা বলে ছিলেন,
“রাম
(আমি)
যেহেতু
স্বস্ত্যয়নী নেয়নি তাই যারা
স্বস্ত্যয়নী,
যাজক
বা অধ্বর্য্যূ তাদের রামের
কাছে ইষ্টভৃতি জমা না দেওয়াই
ভাল হয়।” তখন মনে মনে কিছুটা
কষ্ট লেগেছিল। bKash
এর
দায়িত্ত্ব পালন কালে অনেকে
আমাকে প্রশ্ন করতো আমি কি
স্বস্ত্যয়নী কিনা,
তখন
থেকেই মনে মনে ভাবতে লাগলাম
জীবনতো একটাই কত বৎসর তো পার
কারলাম এখন স্বস্ত্যয়নী নেয়া
উচিৎ।
জীবনের
অনেকটা সময় চলে যাওয়ার পর যখন
বুঝলাম এই জীবনটা কিভাবে
ঠাকুরের কাজে লাগানো যায় তার
পথ খুজতে থাকলাম। তখন
শ্রীশ্রীঠাকুরের একটি বানী
খুব মনে ধরলো “সব সমস্যার
সমাধান /
জানিষ
ইষ্টপ্রতিষ্ঠান।”
মনে
মনে ঠাকুরের কাছে আবারো
প্রার্থনা যানাই ঠাকুর আমাকে
এমন একটা পথ বলে দাও যেখানে
আমার জীবন নির্বাহের জন্য
যতটুকু প্রয়োজন তেমন একটা
আয়ের ব্যবস্থা হয় এবং আমি যেন
তোমার কাজ সঠিক ভাবে করতে
পারি। তাই আমার একটা ব্যবসা
করতে হবে কিন্তু টাকা নাই।
আমার স্নেহের ছোট ভাই বলরাম
এগিয়ে আসলো আমার এই বিপদ থেকে
পরিত্রান করতে। শুরু করলাম
আমাদের ব্যবসা ও চললো আবার
নতুন করে ঠাকুরের কাজ করার
অপার সময় ও সুজোগ।
ইংরেজী
২০১৭ সাল ৩ রা মার্চ আমি শুধু
মায়ের অনুমতি নিয়ে পূজনীয়
শ্রীবিনায়ক চক্রবর্ত্তী
দাদার মাধ্যমে স্বস্ত্যয়নী
ব্রত গ্রহন করি। স্বস্ত্যয়নী
ব্রত মানে জীবনকে সুন্দর করতে
পাঁচটি বিধান সঠিক ভাবে মানতে
হবে। তারপর বেশ কয়টি বছর চলে
গলে এভাবেই কাজ করতে করতে।
একদিন সহ-প্রতি
ঋত্বিক পার্থ সারথী চক্রবর্ত্তী
দাদা বাসায় যাওয়ার পর তিনি
তপোবিধায়ন,
দ্বিতীয়
খন্ড গ্রন্থের বানী নং ২২৬
টি পড়ে শুনালেন,
সেই
বানীর একটি জায়গায় ছিলঃ-
…........
ইষ্টের
স্বরণ ও প্রীত্যর্থে-
তুমি
ভালবাস
এমনতর
কোন জিনিষ
উৎসর্গ
ক'রো-
তোমার
স্বাস্থ্য যা'তে
অক্ষুণ্ণ থাকে
তা'র
প্রতি লক্ষ্য রেখে,
জীবনে
সেটিকে
নিজের
তৃপ্তির জন্য
আর
ব্যবহার ক'রো
না;
সম্পূর্ন
বানীটিই খুব সুন্দর,
এই
অংশটুকু শুনে আমিও মনে মনে
সিন্ধান্ত নেই আমার প্রিয় ফল
তরমুজ আমি পরমপিতে উৎসর্গ
করবো। তার কিছুদিন পর আমি
তরমুজ উৎসর্গ করলাম।
২০২০
সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি ১৫ তম
ঋত্বিক সম্মেলন। সাংগঠনিক
নিয়ম মেনেই পূজনীয় অধ্যক্ষ
শ্রীবিদ্যুৎরঞ্জন চক্রবর্ত্তী
দাদা আমাকে যাজকের আশির্বাদ
প্রদান করেন। তিনি কিছু নিয়ম
বলে দিলেন সামনের দিনগুলোতে
কিভাবে পরমপিতার কাজ করতে
হবে। কারন এখন থেকে পরমদয়ালকেই
আর নিখুত ভাবে প্রচার ও প্রতিষ্ঠা
করার মহান দ্বায়িত্ব আমাকে
দেওয়া হলো।
১৯৯২
সালে দিক্ষা গ্রহনের সময়
অনকেটা না বুঝেই সংকল্প করেছিলাম
“মানুষের জীবন ও বৃদ্ধির পরম
উদ্ধাতা শ্রীশ্রীঠাকুর
অনুকূলচন্দ্রকে প্রতিষ্ঠা
করাই এইক্ষণ হইতেই আমার জীবনরে
যজ্ঞ হউক।” এই সংকল্পটি
বাস্তবায়ন করার এইতো সুজোগ।
পরমপিতার কাছে প্রার্থনা যেন
আমি তার কাজ সঠিক ভাবে করতে
পারি।
জয় গুরু!
No comments:
Post a Comment