The Web This Blog

Tuesday, September 17, 2019

নারী থেকে মা (তৃতীয় পাতা)


~~ দ্বিতীয় পাতা ~~
~~ তৃতীয় পাতা~~


রবীন্দ্রনাথ বাবু কিছুটা আত্মকেন্দ্রিক নিজের ভাল ছাড়া আর কারও দিকে তাকানোরও সময় নাই তার, তিনি যা বুঝবেন তাই করবেন কারও সাথে কিছু বুঝতে চানও না এমনকি বুঝেও না। রবীন্দ্রনাথ তার বাবা মাকে বলে রিতা রানী যেহতু গর্ভবতী তাই তাকে তার বাবার বাড়ীতে রেখে আসা দরকার, কিন্তু কেও রাজী হয় না কারন এত তারাতারি কি দরকার। কিন্তু রবীন্দ্রনাথ মনে মনে অন্য ফন্দি একেছেন, এমনকি রিতা রানী কেও তিনি কিছু জানায়নি। 
 
রবী বাবু ও রিতা রানী চলে আসে তার শ্বশুর বাড়ী ইছাপুরাতে। শ্বশুরকে জানায় তারা ভারতে চলে যাবে। শ্বশুর মহাশয় কিছুতেই রাজি হয় না, কারন তার মেয়ে গর্ভবতী তার উপরে যদি কোন সমস্যা হয় তাহলে সবাই কি বলবে। 
 
রবীন্দ্রনাথ এক রুখা মানুষ তিনি যা ভাববেন তাই করবেন, তাতে অন্যের কি ক্ষতি হলো দেখার দরকার নাই। তিনি স্ত্রী কে নিয়ে রওনা হলেন ভারতের উদ্দেশে, বলা বাহুল্য তারা কেহই এর পূর্বে ভারতে যাননি। রিতা রানী অনেক কান্না কাটি করছেন না যাওয়ার জন্য, কিন্তু কে শোনে কার কথা। তারা পৌছায় মাগুরা জেলার কাজলী নামক গ্রামে। সেখানে রবীন্দ্রনাথ বাবুর মামার বাড়ী। তারা সব খুলে বলে ভারত যাবার কথা। তখন পাসপোর্ট না থাকলেও অবধ্য ভাবে ভারত যাওয়া যেত সহজে। 
 
পরের দিন সকালে তার দিদিমা (মা এর মা) কে নিয়ে রওনা হলেন জীবননগর এর উদ্দেশে সেখান থেকে দালাল এর মাধ্যমে ভারত যাওয়া যায়। জীবননগর যেয়ে আত্নীয়ের মাধ্যমে এক দালাল ঠিক করা হয়, যিনি ভারত যাবার ব্যবস্থা করে দিবেন। গ্রামের মেঠ পথ, ডোবা নালা, ক্ষেতের আইল ধরে তার পৌছায় বর্ডারের কাছে। এখানে এসে তারা একটি ঘরে কিছুটা বিশ্রাম নেয়, দালাল বলে এর পরের জায়গাটা তাদের একাই যেতে হবে। একটি নির্দিষ্ট সময় বর্ডার কিছুটা ফাকা থাকে। তখন তাদের পার হতে হবে নিজ দায়িত্বে।

এতটা পথ তারা চলে এসেছে এখন আর পিছনে ফিরে যাওয়া যাবে না। তারা কিছুটা ঝুকি নিয়েই পার হলেন ভারতের বর্ডার। ভারতে পৌঁছানোর পর তারা তার এক মামা বাড়ীতে কলকতার রানাঘাট নামক স্থানে। তিন জনকে দেখে মামি কিছুটা বিরক্ত হলেও মামা তেমন কিছু বলে না। সব কিছু শুনে মামা তার সেলুন দোকানে ভাগিনার জন্য একটি কাজ করার ব্যবস্থা করেন। একটি মাত্র রুম যেখানে কষ্ট করেই চার জনকে থাকতে হয়।

কিছু দিন যাবার পর মামি কিছুটা রাগ করেই মামাকে বলতে থাকে তোমার ভাগিনা-ভাগিনা বৌ যায় না কেন। এই কথা রবী বাবু শুনতে পায়। তারপর তারা দুই জনে ঠিক করে রিতা রানীর এক মাসি বাড়ী আছে কাছেই। তারা সেখানেই থাকবে। সেখানে যাবার পর রিতা রানীর মাসি দেখেতো খুবই খুশি। তাদের একটি ঘর ছেরে দেয়া হলো থাকার জন্য এবং রবি বাবুকে এক দোকানে কাজ ঠিক করে দেয়া হলো। 
 
কিছুদিন পর বাংলা ১৩৮৭ সালের ৩ রা পৌষ, বৃহস্পতিবার রাত ১২ ঘটিকায় জন্ম নেয় তাদের প্রথম কন্যা সন্তান। বাবা আদর করে নাম রাখে মাধবী রানী।
 
এদিকে মিনতি রানী ও কালী পদ বাবু কবিরাজি বিদ্যায় পারদর্শী ছিলেন। তারা নানা ভাবে চেষ্টা চালাতে থাকে তাদের ছেলে, ছেলে বৌ ও প্রথম নাতনী দের কি ভাবে বাংলাদেশে আনা যায়। রবি বাবুর কাজ কর্ম ভালই হতে থাকা। তারা মনে মনে ঠিক করে ভারতেই স্থায়ী ভাবে থাকার। সেই মোতাবেক একটি জায়গা কেনার বিষয় চেষ্টা করতে থাকে। 
 
কিন্তু একদিন হটাৎ করেই মিনতী রানী হাজির হয়ে যান ভারতে যেখানে রবি বাবু ও রিতা রানী থাকতেন। মা কে দেখে কেমন যেন মানসিক পরির্বতন আসে রবি বাবুর। কিছুতেই আর ভাল লাগছেনা এখন ভারতে থাকতে। রিতা রানীর আপত্তি থাকা সত্তেও বাংলাদেশে চলে আসবে রবী বাবু। তখন মাধবী এর বয়স তিন-চার মাস হবে। আবার সবকিছু গুছিয়ে তারা চলে আসে বহু কষ্ট করে বাংলাদেশে। 
 
দেশে আসার পর আবার সংগ্রামের জীবন শুরু হয় তাদের। সেলুন করে খুব একটা সংসার চালানো যাচ্ছে না। এমনও দিন গেছে মেয়ের জন্য দুধ ও কিনে দিতে পারে না রবী বাবু। দুই রুমের একটি ফ্লাটে ১৩-১৪ জন সদস্যের বসবাস। 
 


~~ চতুর্থ পাতা ~~

No comments:

Post a Comment