এই
লেখাটি আমার প্রিয় লেখক আনিসুল হক কে উৎসর্গ করলাম। গল্পের
চরিত্রগুলো আমার পরিবারের
লোকদের নিয়ে লেখা,
তাই
অন্য কারও জীবনের সাথে মিলে
গেলে সেটা তার একান্তই ব্যক্তিগত
ও কাকতালীয়।
~~
সূচনা
~~
গল্পের
প্রধান চরিত্র,
যাকে
নিয়ে এই লেখা তিনি একজন সাধারন
হিন্দু নারী। তাঁর পরিবারের
বসবাস ছিলো নারায়ণগঞ্জ জেলার
রূপগঞ্জ থানা ও ডাকঘর ইছাপুরা
এর ছনি নামক ছোট্ট একটি গ্রামে।
তাঁর ঠাকুর দাদা (বাবার
বাবা)
ছিলেন
একজন সাধারন গৃহস্থ ও নরসুন্দর
(নাপিত)।
তাঁর নাম ছিল স্বর্গীয় গঙ্গাচরন
শীল। তিনি খুব সাধারন জীবনযাপন
করতেন। গঙ্গাচরন শীল এর বড়
কন্যা ও তাঁর একমাত্র পুত্র
ছিলেন স্বর্গীয় মতি লাল শীল।
তিনিও তার বাবার পেশা বা বংশগত
পেশাই করতেন।
মতি
লাল শীল যখন বিবাহ উপযুক্ত
হলেন তখন বাগাইর (জাজিরা),
কেরানীগঞ্জ
জেলার স্বর্গীয় নিবারন চন্দ্র
শীল এর কন্যা স্বর্গীয়া সুরবালা
শীল এর সহিত বিবাহ হয়। নিবারন
চন্দ্র শীল এর এক পুত্র পাঁচ
কন্যা ছিল,
সুরবালা
ছিল পঞ্চম সন্তান। ৯০ টাকা
পন দিয়ে মতি লাল শীল তাকে বিবাহ
করেন। বাংলায় তখন বৃটিশ
রাজত্বকাল,
তখনকার
মানুষরা খুবই সাধারন জীবনযাপন
করতেই বেশী ভালবাসতেন। এই
ঘরেই জন্ম নেন আমার গল্পের
নায়িকা বা প্রধান চরিত্র।
ছনি
নামক গ্রামটি খুবই সাধারন
অন্যান্ন গ্রামগুলোর মতই।
যেখানে পাখি ডাকে,
চারিদিকে
ফসলি জমি,
খেলার
মাঠ যেখানে বিকাল হলেই সকল
বয়সের পুরুষরা তাদের পছন্দ
মত খেলা করে,
পাশদিয়ে
নদী বয়ে গেছে,
নদীর
পাশে বিশাল একটি বট গাছ,
বিশাল
হাট যেটা সপ্তাহে দুই দিন বসত।
মতি
লাল শীল ও সুরবালা শীল একে
অপরে যতটা না ভালবাসত তার চেয়ে
বেশী একজন আরেকজনকে শ্রদ্ধা
করতো। তিনি ছিলেন আলিমনঃ
গোত্রের কায়স্ত শীল। আমৃত্যু
তাদের মাঝে কখন কোন বিষয় ঝগড়া
হয়েছে এমন খুব একটা দেখা যায়নি।
বিবাহের কয়েক বছর পর সুরবালা
শীল একজন অপূর্ব সুন্দরী এক
কন্যা সন্তান জন্ম দিলেন।
নাম রাখা হলো পারুল বালা। তার
এক বছর পর সুরবালা শীল একজন
পুত্র সন্তান জন্ম দিলেন তার
নাম রাখা হলো সেবক চন্দ্র শীল।
একে একে আরো তিন কন্যা ও দুই
পুত্রের জন্ম দেন। তাদের নাম
যথাক্রমে শান্তি বালা,
কানন
বালা,
আন্না
রানী শীল,
দিলিপ
চন্দ শীল,
তারক
চন্দ্র শীল।
সেই
সময় সাধারন মধ্যবিত্ত পরিবারের
মেয়েদের লেখা-পড়া
করানোর ইচ্ছা তেমন কারই ছিল
না। তাই মেয়েদের লেখা পড়া
করাবার ইচ্ছা মতি লাল শীলের
ও ছিলো না। সাত সন্তানের পিতার
কাছে লেখাপড়া একটি অতিরিক্ত
খরচের মধ্যেই পরে। বড় ছেলের
(সেবক
চন্দ্র)
যখন
৯-১০
বছর তখন তাকে তার মামা নিয়ে
তার কাছে যে ভাগিনাকে লেখাপড়া
করাবে পাশাপাশি হাতের কাজ
(কামারের
কাজ)
শিখাবে।
মেজো
ছেলে কোন রকম লেখা পড়া শেষ করে
পরবর্তীতে গ্রাম ডাক্তারি
পাশ করে গ্রামেই ডাক্তারি
পেশা শুরু করে। বেশ কয়েক বছর
ইতালিতে বসবাস করে এসে এখন
ঢাকাতে ব্যবসা করছে। ছোট ছেলে
অত্যান্ত মেধাবী ও ভদ্র।
Mechanical
Engineer হিসাবে
BSC
পাশ
করে এখন স্বনামধন্য একটি
গার্মেন্টস এর জিএম হিসাবে
কর্মরত আছেন।
অপর
দিকে কন্যারা নিজ নিজ স্বামী-সংসার
নিয়ে ভালই আছে। পুত্র গুলো
তাদের চাকরি ব্যবসা সংসার
নিয়ে দিন কাটাচ্ছে।
~~ প্রথম পাতা ~~
No comments:
Post a Comment