The Web This Blog

Tuesday, April 21, 2020

মেষ রাশির (Aries) বৈশিষ্ট


আমার ছোট মেয়ে অরুনিমা সরকার জন্ম গ্রহন করেছে ০২ এপ্রিল ২০২০ খৃষ্টাব্দ, জন্মসূত্রে সে মেষ রাশির জাতিকা। যারা ২১ মার্চ থেকে ২০ এপ্রিল বা বাংলা চৈত্র ৮ থেকে বৈশাখ ৭ এর মধ্যে জন্ম গ্রহন করে তারাই মেষ রাশির জাতক বা জাতিকা। আজ জানবো কেমন হয় এই মেষ রাশির জাতক বা জাতিকারা।

মেষ রাশির শুভ সংখ্যাঃ- ১৯
মেষ রাশির অধিপতিগ্রহঃ- মঙ্গল (যুদ্ধবিগ্রহের দেবতা)
মেষ রাশির শুভ রং- সবুজ
মেষ রাশির শুভ রত্ন পাথরঃ- রক্তপ্রবাল (Red Coral)

মেষ রাশির জাতক-জাতিকারা মঙ্গল গ্রহের দ্বারা প্রবাহিত হওয়ায় এরা খুবই প্রানবন্ত, সাহসি, ব্যক্তিত্বসম্পন্ন ও তেজস্বী মনোভাবের হয়ে থাকে। জন্মকালে মেষ রাশির মঙ্গল, রবি, বৃহস্পতি ও বুধ গ্রহের প্রভাব থাকে যা জীবন সংগ্রামে সাফল্য আনতে বিশেষ সহায়তা করে। এই রাশির জীবনীশক্তি অত্যাধিক ও এরা সকল কাজের নেতৃত্ব দানে পটু হয়। এই জাতক-জাতিকারা সামন্য অনুপ্রেরণা পেলে যে কোনো কাজ ভালোভাবে সম্পন্ন করে সকলকে তাক লাগিয়ে দিতে পারেন। সহজাতভাবেই এরা মহৎ, দয়ালু ও বন্ধুদের প্রতি বিশ্বস্ত হয়। যদিও কিছু মানুষ সবসময় এদের ভুল বুঝে থাকে।

মেষ রাশির চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যঃ- এ রাশির জাতক-জাতিকাদের উপর মঙ্গল গ্রহের প্রভাব সবচেয়ে বেশী থাকে। মঙ্গল গ্রহয়ের ভালো প্রভাবের কারনে এর খুব সাহসী, আবেগপ্রবণ ও উচ্চাভিলাষী হয়ে থাকে। এদের প্রাণ শক্তি বেশী থাকার কারনে তাদের চরিত্রের প্রধান দিক হল কর্মতত্পরতা ও উদ্যামী মনোভাব। তারা যে কোন কাজ দ্রুত শেষ করে এবং ভাল ফলাফল তারা সবসময় কাম্য করে। এ রাশির জাতক-জাতিকাদের যেমন দ্রুত রেগে যাবার প্রবনতা আছে তেমনি দ্রুত ঠান্ডা হতেও সময় লাগে না। এরা প্রচন্ড রকম স্বাধীনচেতা হয়ে থাকে। সহজে চ্যালেঞ্জ গ্রহন করা ও অপরকে সাহায্য করতে এরা পিছপা হয় না।

মেষ রাশির কর্ম জীবনঃ- যেহেতু এই জাতক-জাতিকারা নেতৃত্বপরায়ণ, সৃজনশীল ও উদ্যমী তাই তারা দ্রুত চিন্তা ও কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করা স্বভাবজাত। যেখানে প্রতিযোগিতা আছে, জনসংযোগ আছে, দৈহিক ও মানসিক শ্রমের সুযোগ আছে সেসব পেশায় এরা দ্রুত সাফল্য অর্জন করে থাকেতাদের উচ্চাভিলাষী মনভাবের কারনে এই জাতক-জাতিকাদের প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানে কদর চিরদিনই থাকবে। তবে এরা সাধারনত ইঞ্জিনিয়ার, সৈনিক, খেলোয়াড়, সুপারভাইজার, সাংবাদিক ও ব্যবসায়ী হিসেবে অধিক ভালো করবে। কারন এ পেশা গুলোতে ঝুঁকি নিয়ে কিছু ভালো এবং ব্যতিক্রম করার সুযোগ থাকে যা তাদের স্বভাবসিদ্ধ

মেষ রাশির আর্থিক জীবনঃ- অর্থ উপার্জনে এরা প্রচণ্ড রকম মনোযোগী হয়। অর্থ উপার্জন করার পাশাপাশি আবার এরা খরচের দিকেও সমান, এক হাতে যেমন উপার্জন করে অন্য হাতে তেমনি ব্যয় করতেও এরা সমান পটু। নেতৃত্ব এবং চ্যালেঞ্জ নেবার স্বভাব থেকেই এরা জীবনকে আনন্দ-ফুর্তি ও কর্তৃত্বের মধ্যে সবসময় সক্রিয় রাখতে চা, তবে এরা এও জানে যে জীবনের আনন্দ ফুর্তি অর্জনের জন্য অর্থই হচ্ছে পূর্বশর্ত। যেহেতু এই জাতক-জাতিকারা অর্থ উপার্জনে বেশ পারদর্শী তাই তারা যদি কিছুটা মিতব্যয়ী হয় তাহলে অর্থের অভাব এদের কোনো দিন হয় না। এদের অন্যতম আরেকটি দিক হচ্ছে এরা খুবই সৎ এই সততার কারনে মানুষ তাদের বিশ্বাস ও ভালবাসে

মেষ রাশির জীবনে প্রেম ও বিয়েঃ- এই জাতক-জাতিকাদের একে অপরকে আকর্ষণের জন্য রয়েছে প্রাণচঞ্চল স্বভাব। তবে বাস্তব বাদী হওয়ার কারনে তারা প্রেম ও বিয়ে নিয়ে কখনোই আকাশ-কুসুম কল্পনা করতে পছন্দ করে না। প্রেমের ব্যাপারে নানান অলি-গলি ঘুরে সময় ব্যয় করাকে অপছন্দ করা ও যথার্থ প্রেমিক-প্রেমিকা পেলে সরাসরি প্রস্তাবে এরা আগ্রহী হয় এবং তাকে নিয়েই থাকে জীবনের সব ভালবাসা। অনেকে প্রেমের ব্যাপারে স্বাধীনতা ও অ্যাডভেঞ্চারী হয়ে থাকে যার কারনে একাধিক ভালো লাগায় জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে। এই জাতক-জাতিকাদের জন্য শান্ত, উদারমনা, সাজগোজ, পোশাক-পরিচ্ছদ ও যৌনসচেতন সঙ্গীর প্রয়োজন হয় যে জীবনকে ভালোবাসা, অনুপ্রেরণা ও প্রশংসা দিয়ে ভরিয়ে দেবে। অন্যথায় কারও কারও জীবনে একাধিক বিয়েও হতে পারে।

মেষ রাশির ঘর-সংসারঃ- এই জাতক-জাতিকারা জীবনের অনেক কিছুর মতই তারা গৃহ-সংসারকে খুব গুরুত্ব দিয়ে থাকে।
এরা সবসময় সন্তান ও প্রিয়জনদের নিয়ে একটি সুখী সংসারের চিন্তা করে থাকে এবং এক্ষেত্রে মেষ রাশির জাতিকারা আদর্শ মা ও সুগৃহিণী হিসেবে বেশী পরিচিত হয়। রুচিশীলতা তাদের একটি গুণ তাই রুচির ছাপ গৃহের সবকিছুতে দেখা যায়। এরা খুবই অতিথিপরায়ণ হয় আত্মীয়স্বজন, বন্ধু-বান্ধবের জন্য তাদের দুয়ার সব সময়ই খোলা থাকে। এরা সন্তানদের সঙ্গে খেলাধুলায় অংশগ্রহণ করতে পছন্দ করে এবং আসে পাশের মানুষ গুলোর মত করে সন্তানরাও তাদের উজ্জ্বল ব্যক্তিত্বকে পছন্দ করে থাকে।

মেষ রাশির স্বাস্থ্যগত বৈশিষ্ঠঃ- এই জাতক-জাতিকারা জন্মগতভাবে সুঠাম দেহের অধিকারী হয়। তাড়াহুড়া ও বেপরোয়া ভাব থাকার কারনে এদের মধ্যে যে কোনো সময় দুর্ঘটনার শিকার হবার প্রবনতা থাকে। এই জাতক-জাতিকাদের মাথা ও মুখমন্ডল কিছুটা দুর্বল অংগ যার কারনে সবসময় খেলাধুলা ও ভ্রমনের সময় কিছুটা সাবধান থাকতে হবে। অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা, উত্তেজনা, ক্রোধ অনেকের স্বাভাবিক স্বাস্থ্য নষ্ট করতে পারে। বৃদ্ধ বয়সেও তাদের মধ্যে তারুণ্য ও একধরনের উজ্জ্বলতা দেখা যায়।

কোন মানুষ সব দিক দিয়েই সম্পূর্ন ভালো হয় না, দোষ-গুণ নিয়েই মানুষ। তাদের যে গুনটি সবাইকে মুগ্ধ করে ঠিক তেমনি সেই গুনটি মাত্রা অতিরিক্ত হলেই কিন্তু অন্যকে বিরক্ত করে তুলতে পারে। আমাদের দোষগুলো আমরা কতটা কমিয়ে রাখতে পারলাম বা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলাম তার ওপরই নির্ভর করে আমাদের জীবনের সাফল্য। জ্যোতিষশাস্ত্রো মতে বৈশিষ্ঠ গুলো যে সবার জীবনে সমান ভাবে প্রভাব বিস্তার করে তা নয়। এক এক জনের জীবনে তা এক এক রকম প্রভাব বিস্তার করে।

No comments:

Post a Comment