বেশ
কিছুদিন যাবত আমার মত গৃহবাসী
(Lockdown)
গোটা
বিশ্ব। এই সময় সকলের সাথে
যোগাযোগের সহজ মাধ্যম হলো
সামাজিক সাইট ও মোবাইল। এই
সময়ে আমার সাথে এমন অনেক গুরু
ভাই ও মায়েদের পরিচয় হয়েছে
যাদের স্বশরীরে কখনো দেখেছি
কিনা যানি না। তারপরও গুরু
ভাই হিসাবে তাদেরকে ভাই-বন্ধু
হিসাবেই গ্রহন করে নিয়েছি।
যেহেতু
গত দুই মাস সারাদিন ঘরবন্ধী
সেই কারনে বেশির ভাগ সময় সামাজিক
যোগাযোগ মাধ্যমে সময় কাটানো
হয়েছে। নতুন গুরু ভাইরা সাংগঠনিক
ভাবে তারা বিভিন্ন সংগঠনের
হয়ে ঠাকুরের কাজ করছে। কিছু
কিছু বিষয় আমাকে ব্যক্তিগত
ভাবে কিছুটা কষ্ট দিয়েছে,
যার
কারনেই আজকরে এই লেখার সূত্রপাত।
কারো ভক্তি বা বিশ্বাসে আঘাত
করার জন্য নয়, শুধু লেখার বিষয় বস্তুটি ভাবতে বলবো। যদি ভাল মনে করেন
তাহলে পালন করবেন না হয় করবেন
না,
সেটা
আপনার একান্তই ব্যক্তিগত।
যে
বিষয়গুলো আমাকে ব্যক্তিগত
ভাবে খুব কষ্ট দিয়েছে সে গুলো
হলোঃ-
১)
অনেকেই
পরম দয়ালের বিভিন্ন বাণী,
জীবনির
কিছু ঘটনা বা কোন আলোচনা
Facebook
এ
প্রকাশ করে থাকেন। এটা খুবই
ভাল কাজ,
কারন
অনেক বাণী বা বিষয় আছে যেগুলো আমার মত অনেকেরই অজানা। তাদের প্রতি
অনুরোধ লেখাগুলো যাতে নির্ভূল
হয় এবং শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র
নামটিও সঠিক ভাবে লিখবেন।
লেখক হিসাবে তার নিচে নিজের
নাম বা Page এর নাম দিবেন না কখনোই। বেশি ভালো
হয় যদি সূত্রটি দিতে পারেন,
কোন
বইতে আছে সেই ঘটনা বা বিষয়টি।
২)
অনেকেই
পরম দয়ালের বিভিন্ন ছবি বা
বিগ্রহ প্রকাশ করেন যেটা খুবই
ভাল লাগে। কিন্তু কষ্টটা লাগে
তখনই যখন দেখি ছবির উপরে বিভিন্ন
লেখা ও অন্য কোন ছবির সাথে
যুক্ত করা বা Graphic
edit করা।
এটা কি কারনে করেন জানিনা!
আপনার কম্পিউটার ও মোবাইল
দক্ষতা শ্রীশ্রীঠাকুরের ছবির
উপর না দেখালে কি হয়না দাদা? অন্য
ধর্মের লোকদের দেখি তাদের
যুগো-পুরুষোত্তমদের
কোন ছবি ভিন্ন ভাবে প্রচার
করলে তারা কতটা ভয়ানক হয়। একজন সৎসঙ্গী হিসাবে আপনি কি এটা
ভেবে দেখেছেন?
৩)
অনেককেই
দেখা যায় তাদের নিজেদের নামে
বা বেনামে শ্রীশ্রীঠাকুরকে
প্রচার করবে বলে এক বা একাধিক
Facebook
এ
Page বা
Group
আছে।
খুবই ভালো। কিন্তু তারাকি
পরম দয়ালকে নাকি নিজেদের
প্রচার করছেন ভাবতে ও বুঝতে কষ্ট হয় আমার।
কারন অনেকেই এটা করছেন শুধু
মাত্র সাংগঠনিক Like
ও
Comments
পাওয়ার
জন্য। আর তাদের যদি সংগঠনের
নীতি নির্ধারকদের সাথে ভাল
সম্পর্ক থাকে তাহলেতো কথাই
নাই। তাদের এই আলোচনা,
ভিডিও
কয়জন অদিক্ষিত মানুষ দেখছে
বা দেখে দীক্ষা গ্রহন করেছে জানিনা,
কারন
যারা দেখছে তারা বেশির ভাগ
মানুষই এই বিষয়ে পূর্বেই অবগত
আছে বলে আমার বিশ্বাস। এতেকরে
শ্রীশ্রীঠাকুরের প্রচার
হচ্ছে নাকি আপনার Page
বা
Group
প্রচার
হচ্ছে বুঝতে পারছি না।
৪)
অনেককেই
দেখেছি যদি বলা হয় দাদা আসুন
আমরা কয়েকজনে মিলে শ্রীশ্রীঠাকুরের
কোন একটি গ্রন্থ বা সাংগঠনিক
পত্রিকা কম দামে ছাপিয়ে বিনা
মূল্যে বা কম দামে বিক্রি করি
তাহলে তাদের কাছে টাকা থাকে
না বা কোন সাহায্যে পাওয়া যায় না। নানান অজুহাত দেখায়
ছেলে-মেয়ে
বিশ্ববিদ্যালয় পড়ে,
বৌ
গান শিখে,
আমার
ব্যাবসা মন্দা চলছে,
নতুন
একটা জমি কিনেছে অনেক টাকা
খরচ হয়ে গেছে। কিন্তু যখনি বলা হয় বইটিতে শ্রীশ্রীঠাকুরের
নামের নিচে আপনারও নাম বড় করে লেখা
থাকবে। তখনই তাদের টাকা
শ্রীকুবের দেবতা এসে দিয়ে
যায়।
৫)
অনেকেই
দেখা যায় যারা বছরে এক বা দুইবার
সংগঠনের কোন উৎসবে দেখা যায়
শুধু মাত্র মাইকে তাদের নিজেদের
আলোচনা করতে,
সংগীত
পরিবেশন করতে বা আনন্দবাজারে
প্রসাদ গ্রহন করতে। সকালে
কিছুটা ব্যস্ত ছিল বলে তারাতারি
আসতে পারেননি। যদি বলা হয় দাদা
উৎসবের জন্য এই কাজটা করে দিতে
হবে,
আজকে
রাত্রে উৎসব অঙ্গনে থেকে মাঠ
পরিস্কার করতে হবে,
মঞ্চটা
সাজাতে হবে,
উৎসবের
জন্য কিছু পোষ্টার বিভিন্ন
এলাকায় ঘুরে ঘুরে লাগাতে হবে,
আনন্দবাজের
জন্য বাজর করতে হবে তখনই তাদের
বাতের ব্যথা শুরু হয়ে যায়, না
হয় অফিসে বড় কোন একটি মিটিং
থাকে। তখন এই সকল কাজ করার জন্য সংঠনের টাকা খরচ
করে লোক ভাড়া করতে হয়।
৬)
অনেকেই
শ্রীশ্রীঠাকুরের চেয়ে সংগঠনের
কোন কোন সহ-প্রতি ঋত্বিক দাদাদের বেশী ভালবাসি,
কারন
তাতে জাগতিক কিছু লাভ থাকতে
পারে বলে মনে হয়। এমনকি সংগঠনের
সেই শ্রধেয় ব্যক্তি যদি কোন
ভুল বিষয় বুঝায় সেটাই অনেকের
কাছে বেশি গ্রহনযোগ্য হয়ে
যায়। যেখানে শ্রীশ্রীঠাকুর
সবকিছুই তার বাণী ও আলোচনায়
বলে গেছেন। যদি কিছু বিষয়
বিস্তারিত জানতে হয় তাহলে
বিজ্ঞ কোন সহ-প্রতি
ঋত্বিক বা শ্রীশ্রীঠাকুর
পরিবারের কারো কাছ থেকে বা
পূজনীয় অধ্যক্ষ-এর
কাছ থেকে জানা যেতে পারে।
অনেক বিষয়ে দেখেছি একটি বিষয়
একাধিক সহ-প্রতি ঋত্বিক দাদা নানান রকম বুঝায় তখন
নিজে যা জানতাম তাও ভুলে যাই আমি।
৭)
অনেক
শাখা সংগঠনেই দেখা যায় একজন
সরল কর্মী,
যাজক,
অধ্বর্য্যূ,
সহ-প্রতি
ঋত্বিকের চেয়ে এলাকার কোন বড়
ব্যবসায়ী ব্যক্তি,
উচ্চপদস্ত
সরকারি কর্মকর্তা,
রাজনৈতিক
ব্যক্তি এরা সংগঠনের নীতি
নির্ধারনী পর্যায়ে থাকে,
যার
ফলে শ্রীশ্রীঠাকুরকে ভক্তির
চেয়ে বড় ভোগ সাজিয়ে নিয়ে খুশি
করানো হয়। শ্রীশ্রীঠাকুর কি
এমন চেয়েছিলেন কিনা আমি জানিনা!
কারন যিনি সংগঠন চালান তার
কতটা ভক্তি ও জ্ঞান শ্রীশ্রীঠাকুর
সম্পর্কে আছে সেটা আগে যাচাই
করা উচিৎ সর্বাগ্রে।
শ্রীশ্রীঠাকুরের
একটি বানী দিয়ে লেখাটি শেষ
করি,
সময়
কিন্তু রয় না ব'সে
চলছে
কেবল অবিরল,
করনীয়
যা'
এখনই
কর
ভবিষ্যে
যদি চা'স্
সুফল। ২৪
~
অনুশ্রুতি,
৬ষ্ঠ
খন্ড,
কর্ম
সবাই
ভাল থাকুন। শ্রীশ্রীঠাকুরকে
নিজের মত প্রচার না করে তাঁর
মত করেই আমরা প্রচার করি।
সকলেই যেন তার মত হতে পারি,
আমার
মত করে শ্রীশ্রীঠাকুরকে যেন
না সাজাই।
No comments:
Post a Comment