শরৎ
দা (হালদার)
— শুনেছি
কৰ্ম্মফল মানুষকে ভোগ করতে
হয়ই,
এ
হ’তে কি মানুষের রেহাই নেই?
শ্রীশ্রীঠাকুর
— কৰ্ম্মই জীবনের নিয়ন্ত্রণ-সূত্র।
কৰ্ম্মফল মানুষের চরিত্রে
ও মস্তিস্কে বিশেষ-বিশেষ
প্রবণতা ও ঝোঁকের সৃষ্টি ক'রে
থাকে,
তার
চলনও তাই-দিয়ে
নিয়ন্ত্রিত হয়,
এবং
তার ফল যা'
হবার
তাও হ'য়ে
থাকে। কোন কায়দায়
পূৰ্ব্ব-কৰ্ম্মফল-প্রসূত
খারাপ বুদ্ধি,
প্রবণতা
ও ঝোঁকগুলিকে যদি বদলে দেওয়া
যায়,
অর্থাৎ
ভালর দিকে মোড় ফিরিয়ে দেওয়া
যায়,
তাহ'লে
দুর্ভোগের হাত-থেকে
অনেকখানি রেহাই পাওয়া যেতে
পারে। তবে,
আপনার
আগের কর্মের ভিতর দিয়ে যদি
অপরের ক্ষতি হ'য়ে
থাকে,
তার
একটা প্রতিক্রিয়া ঘুরে-ফিরে
আপনার উপর এসে বর্ত্তান সম্ভব।
কিন্তু ভালমন্দ যা'-কিছুর
শুভ-নিয়ন্ত্রণে
যদি আপনি অভ্যস্ত হন,
তাহ'লে
মন্দ-কিছু
ঘটলেও তা'
আপনাকে
বিধ্বস্ত করতে পারে কমই। তাই,
সবকিছুকে
উপেক্ষা ক'রে
ইষ্টকে অনুসরণ ক'রে
চলতে হয়। মন যে কতরকম বাতলায়,
তার
কি ঠিক আছে?
মনের
কথা শুনে বিভ্রান্ত হ'তে
নেই। যত কষ্টই হোক,
ইষ্টের
নির্দেশ কাঁটায়-কাঁটায়
পালন ক'রে
চলতে হয়। এই কষ্টের ভিতর-দিয়ে
বহু কষ্টের হাত-থেকে
নিষ্কৃতি পাওয়া যায়। আমি
অনেক সময় মানুষকে খামাকা
এক-একটা
কাজ করতে বলি।
বুদ্ধি থাকে,
otherwise engaged (অন্যথা
ব্যাপৃত)
রেখে
অন্য-একটা
বিপদের হাত থেকে বাঁচিয়ে
নেওয়া। তাই,
যারা কথা
শোনে,
তাদের
অনেক বিপদ কাটিয়ে নেওয়া
যায়। কথা না-শুনলে
তাদেরও যন্ত্রণা,
আমারও
যন্ত্রণা। আমি একজনকে হয়তো
বললাম-বাইরে
বেরিয়ে কাজ নেই,
এখানে
থাকেন,
লোকজন
আসলে তাদের সঙ্গে যাজন-টাজন
করবেন,
কথাবার্তা
বলবেন,
আমার
এখানে ঘুরবেন-ফিরবেন।
তাতে তার হয়তো
বিশেষ কতকগুলি অসুবিধা হ'তে
লাগল — পয়সাকড়ির
টানাটানি,
বাড়ীতে
অশান্তি ইত্যাদি। তাই,
আমার
কাছে হয়তো বলল-
'ঠাকুর!
এখানে
ব'সে-ব'সে
থাকি,
কোন
কাজকর্ম হয় না,
অমুক
জায়গায় গেলে খুব ভাল কাজকর্ম
হয়, আমার
শরীর-মনও
ভাল থাকে,
আপনি যদি
অনুমতি দেন,
তাহ'লে
বেরোই।'
আমি হয়তো
দেখলাম — তার অত্যন্ত আগ্রহ,
তখন যদি
না করি,
তাহ'লে
মনে খুব ব্যথা পাবে,
সে-ক্ষেত্রে
অগত্যা হয়তো মত
দিলাম। বাইরে যেয়ে হয়তো
একটা কঠিন অসুখ বাধিয়ে আসল,
খুব
ভুগল।
আলোচনা-প্রসঙ্গে,
পঞ্চম
খন্ড
১৫-১০-১৯৪৩
ইং,
শুক্রবার
No comments:
Post a Comment