The Web This Blog

Saturday, April 17, 2021

তাক দেবী ভিক্ষাং দেহী

সারা বিশ্বেরমত বাংলাদেশের করোনা পরিস্থিতিও ভয়াবহ। রোজ মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছেই। আমার বেশকিছু প্রিয় মানুষ চলে গেছেন ওপারে। এই অবস্থায় আসুন আমারা যারা মৃতুবরন করি নাই এখনও ঘরে থাকি, কঠোর লকডাউন কঠোরভাবেই মানি। তাতে কোভিড রোগীর সংখ্যা কিছুটা হলেও কমবে। এখন অনেক হাসপাতালেই জায়গা নেই, এত রোগীর চাপ হাসপাতালগুলো নিতে পারছে না, কোভিড রোগীর সংখ্যা কমলে হয়ত পরিস্থিতি কিছুটা সামাল দেওয়া যাবে। আর কী করবেন? হাসতে হবে মন ভরে, পেট ভরে। হাসলে পরে রোগ প্রতিরোধ শক্তি নাকি কিছুটা বাড়ে।

আমেরিকার হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা বলেছেন, প্যানডেমিকের সময় হাসতে হবে। অনেকদিন আগে ভেবেছিলাম এই বিদ্রুপ রচনা বা ব্যঙ্গাত্মক গল্পটি লিখবো, কিন্তু সময় করে উঠতে পারছিলাম না। বর্তমানে লকডাউন এর বর্ষপূর্তি চলছে। ঘরে বসে বসে কাজ নাই। তাই লিখতে বসলাম।

প্রতিটি মানুষ জম্মগ্রহন করে কিছু বৈশিষ্ট নিয়ে যা চাইলেও সহজে পরিপর্তন করতে বা বাদ দিতে পারে না। যদি বলা হয় প্রতিটি মানুষ Deoxyribonucleic Acid নিয়ে জম্মগ্রহন করেন অনেকেই অবাক হবেন এই শব্দটি শুনে এইটা আবার কি। বিজ্ঞানের ভাষায় আমরা বলি DNA বা জম্মগত বৈশিষ্ট। ধর্ম বিশেষজ্ঞরা বলেন একজন মা সন্তান ধারন করার সময় যে মনোভাব নিয়ে স্বামীতে আনত হয় তার মনোভাব অনুসারে সন্তানের জম্ম বৈশষ্ট নির্ভর করে। আবার আমার মতো অল্প শিক্ষিত মানুষ তাকে বলে পূর্বপুরুষের রক্তের ধারা।

আমাদের সমাজে একটি প্রচলিত কথা অনেক শুনা যায়, কয়লার ময়লা যতই পরিষ্কার করো তার কালো ময়লা সহজে যায় না। এখন আসা যাক গল্পের নামকরনের সার্থকতায়।

অনেক কাল আগে এক দেশে এক রাজা ছিল, কিছুদিন আগে তার স্ত্রী মারা গেছেন। তার মন ভালো নেই, রাজ সভার কাজ কর্মে মন নেই। সবাই চিন্তায় পরে গেল কি করা যায়। সবাই ঠিক করলো একজন সুন্দরী রাজকন্যা দেখে রাজার সাথে বিয়ে দিতে হবে। কিন্তু কোথাও তেমন রাজকন্যা পাওয়া যাচ্ছিল না। রাজ মন্ত্রী একজন ঘটক ঠিক করলো, এবং বলা হলো যদি ভালো কন্যা এনে দিতে পার তোমাকে অনেক পুরষ্কার দেয়া হবে।

ঘটক পুরস্কারের লোভে তার পরিচিত এক মেয়েকে রাজকন্যা সাজিয়ে রাজার সাথে বিয়ে দিলো। বিয়ের কিছুদিন পর দেখলো নতুন রানী ভীষন মন খারাপ করে বসে থাকে। রাজা তাকে জীজ্ঞাস করে কি কারনে মন খারপ। নতুন রানী বলে আমি ও আমার মা একদিন বাড়িতে বাড়িতে ভিক্ষা করছিলাম এমন সময় ঘটক এসে আমার মা-কে বললো তোমার মেয়েটা অনেক সুন্দর ওকে যদি রাজার সাথে বিয়ে দেও তাহলে তোমাকে আর ভিক্ষা করতে হবে না। তারপর আপনার সাথে আমার বিয়ে হয়।

কিন্তু এত দাস-দাসী আমার সেবা করে কিন্তু আমার তো কিছুই ভালো লাগে না। রাজা পরলো মহা বিপদে কি করা যায়। রানী এখন ভিক্ষা করতে যাবে?? রাজা রানীকে কিছুদিন অপেক্ষা করতে বললো। রাজা একটি “তাক দেবী” নামক রাজপ্রাসাদ যেখানে ছোট ছোট অনেকগুলো কামড়া এবং প্রতিটি কামড়ায় রয়ছে একটি তাক (পাটাতন) ও চাল ভর্তী বড় একটি করে পাত্র। প্রতিদিন বিকালে রাজা আর রানী শুধু ওই রাজপ্রাসাদে যায় এবং সবাইকে বলে এখানে যাতে অন্য কেও প্রবেশ না করে।

রানী সেই রাজপ্রাসাদে প্রবেশ করে একটি করে কামরার তাকের কাছে যায় আর বলে “তাক দেবী ভিক্ষাং দেহী” রাজা সেই চালের পাত্র থেকে কিছু চাল বের করে রানীর আচলে দেয়। আবার পাসের কামরায় যায় সেখানে গিয়ে রানী আবার বলে “তাক দেবী ভিক্ষাং দেহী” রাজা আবার পাত্র থেকে কিছু চাল বের করে রানীর আচলে দেয়। এভাবে চলে তাদের খেলা। এতেই রানী খুশি, রানী মাহা খুশী মানে রাজাও মহা খুশী, রাজা মহা খুসি মানে রাজ্যের সবাই মহা খুসি।

সুখে খাকাটাই বড় জিনিস, যার যা আছে তা নিয়েই আমাদের সুখে থাকতে হবেরে ভাই।


 একটি কৌতুক দিয়ে লেখাটি শেষ করবো …........

গ্রামের এক চোর চুরি করা ছেড়ে দিয়ে কৃষিকাজ আরম্ভ করল।

গ্রামের সবাই বলল, বাহ্‌, তোমার স্বভাবের এত উন্নতি! কেমনে হলো? চোর বা নতুন চাষা বলল, শখে ছাড়ি নাই ভাই। বাধ্য হয়ে ছেড়েছি।

আগে কোন বাড়িতে যদি বিশ হাজার টাকার মালামাল চুরি করতাম, গৃহস্থ থানায় গিয়ে জিডি করে বলত, আমার বিশ হাজার টাকার মাল চুরি গেছে। পুলিশ কে ঘুষ দিতাম চুরির টাকার ৫০%। বাকি ৫০% আমার লাভ থাকত।

এখন, সব গৃহস্থ বিশ হাজার টাকার জিনিস চুরি গেলে জিডিতে লেখে ১ লাখ টাকা। ঘুষ তখন দিতে হয় ৫০%। এখন বিশ হাজার টাকার জিনিস চুরি করে পঞ্চাশ হাজার টাকা ঘুষ দিলে কি ব্যবসায় পোষায়, বলেন?


ভালো থাকুন, নিরাপদে থাকুন সবাই।

No comments:

Post a Comment