The Web This Blog

Monday, April 22, 2024

দেওঘর ভ্রমন, প্রথম দিন, ~ ০৮-০৪-২০২৪ই, সোমবার

যাত্রা শুরু…..

পেট্রাপোল বর্ডার পার করে আমি, কল্যান দা ও বিধান কাকা CNG যোগে বনগাঁ রেল স্টেশন তারপর ট্রেন যোগে আমরা বিধাননগর (উল্টোডাংগা) নামলাম। ট্রেনে থাকাকালীন আমরা স্থানীয় সময় অনুসারে ঘড়ির কাটা ঠিক করে নিলাম ৩০ মিনিট পিছনে দিয়ে। প্রায় দুই ঘন্টা ট্রেন ভ্রমন করলাম মাত্র জনপ্রতি ২০ রুপি মূল্য টিকিটে। সেখান থেকে আমরা CNG যোগে জোড়া মন্দির, বাগুইআটি নামলাম। কিছুটা পায়ে হেটেই আমরা পৌছে গেলাম রেলপুকুর রোডের প্রিয়পরম শ্রীশ্রীঅনুকূলচন্দ্র চর্য্যাশ্রম মন্দিরে। ঘড়ির কাটা তখন প্রায় সন্ধা ৫.৩০ টার মত স্থানীয় সময়। পূর্বে থেকেই আমাদের জন্য নিচ তলার একটি রুম ঠিক করা ছিল। সেখানেই পরিচয় হলো বাবুল চক্রবর্ত্তী (সহ-প্রতি ঋত্বিক) দাদা ও কমল দাদাদের সাথে। আমরা ব্যাগ-পত্র রেখে হাত-মুখ ধুয়ে দ্বিতীয় তলার প্রার্থনালয় সন্ধা প্রার্থনা করলাম।

বাগুইআটি মন্দিরে যারা গিয়েছেন তারা জানেন যে, সেখানে নিজে রান্না করে খেতে হয়। আমার মত একজন দক্ষ কর্মী যা যা পারিনা তার মধ্যে রান্না করা অন্যতম। শুধু মাত্র জল ফোটানোটা ভালো পারি আর কিছু না। প্রায় ১০ দিনের সফরে আমি বিশেষ ভাবে আমাদের কল্যাণাংশু নাহা (সহ-প্রতি ঋত্বিক) দাদার‌‌‌‌ কাছে চির কৃতজ্ঞ থাকবো, তিনি না থাকলে এত সুন্দর ভাবে আমার ভারত ভ্রমন শেষ করতে পারতাম না। কল্যান দা একজন স্বপাকি মানুষ, আমাদের কথা চিন্তা করে যতদিন কলকাতা ছিলাম তিনিই রান্না করেছেন আমরা শুধু খেয়েছি। আমি ও বিধান কাকা একটি খাটে ঘুমিয়েছি আর কল্যান দা অন্য খাটে। মন্দিরে হাড়ি-পাতিল, থালা-বাসন থাকলেও দাদা সেগুলো ব্যাবহার করতে নারাজ, তাই নতুন করে হাড়ি-কড়াই কিনার চিন্তা করা হলো।

পূজনীয় শ্রীবিনায়ক চক্রবর্ত্তী দাদা কাছেই নিজস্ব একটি ফ্লাটে স্বপরিবার নিয়ে থাকেন। রেলপুকুর এর বিপরীত পাশেই একটি নিরামিষ খাবারের দোকান আছে, সেখানে কিছুটা হালকা নাস্তা করে  আমরা আনুমানিক রাত ৯ টার দিকে পূজনীয় দাদার বাসায় যাই তাকে প্রনাম করতে। আমি পূজনীয় দাদার জন্য কিছু Olympic Pulse চকলেট ও কল্য়ান দা ঘী, মিষ্টি নিয়ে গিয়েছিলাম বাংলাদেশ থেকে। তখনই জানতে পারলাম পূজনীয় দাদা কোন প্রকার মিষ্টি খান না এখন। আমাদের সেখানে ঘরোয়া পরিবেশেই কিছু সাংগঠনিক কথা-বার্তা চললো। কে কে এসেছে, অন্য সবাই কবে কি ভাবে আসবে সেই খোজ খবর নিলেন পূজনীয় দাদা। কিছুক্ষন পর পূজনীয়া মা শ্রীমতি জোৎসা রানী চক্রবর্ত্তী (পূজনীয় শ্রীবিনায়ক চক্রবর্ত্তী দার সহধর্মীনি) তার ঘর থেকে আসলেন। সবার খোজ খবর নিচ্ছেন ও নানান বিষয় কথা-বার্তা চললো আরো বেশ কিছুক্ষন। 

রাত দীর্ঘ হচ্ছিল, কল্যান দা বললো আমরা এখন বাজারে যাবো সেখান থেকে বাজার করে বাগুইআটি মন্দিরে যাবো। এই কথা শুনে পূজনীয়া মা তার স্বভাব সুলভ মিষ্টি ভাষায় বললো এত রাতে তোমাদের রান্না করে খাবার দরকার নাই। আমার এখান থেকেই খেয়ে যাও। এমন আপ্যায়নের কথা আমি জগৎ জননী মাতা মনোমহিনী দেবীর জীবনিতে পড়েছিলাম। আজ অনেকটাই সেইরকম অনুভব করলাম আমি। আমি যেহেতু প্রথমবার কলকাতা আসছি, তাই হয়তো স্নেহটা বেশীই ছিল। পূজনীয় মা খুব অল্প সময়ের মধ্যে ভাত, পটল ভাজা, ডাল, টমেটো চাটনি তৈরি করে আমাদের ভোজন করালেন। বাগুইআটি মন্দিরে একটি কাঠাল গাছ আছে, বলে দিলো কাঠালের ইচোর খেতে একদিন। 

পূজনীয় দাদর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আমরা বাজারে গেলাম পরেরদিনের জন্য তরিতরকারি কিনতে। আমরা যেহেতু তিনজন ছিলাম তাই সেই পরিমান মত তরকারি কেনা হলো। নতুন একটি হাড়ি, কড়াই ও আনুসাঙ্গিক জিনিষপত্র কিনে মন্দিরে ফিরে আসি। মঙ্গলবার কখন কি করবো সেই মোতাবেক চিন্তা করা হলো। সিদ্ধান্ত নেয়া হলো সকালের খাবার খেয়েই আমরা নিউ মার্কেট, বড় বাজার যাবো ব্যক্তিগত কেনা কাটা করার জন্য। সবাই যেহেতু কিছুটা ক্লান্ত তাই তারাতারি ঘুমেয়ে গেলাম।

দ্বিতীয় দিন......






No comments:

Post a Comment