The Web This Blog

Wednesday, April 24, 2024

চতুর্থ দিন, ~ ১১-০৪-২০২৪ই, বৃহস্পতিবার

তৃতীয় দিন....

সকালে যেহেতু বাইরেই খেতে হয় তাই সবাই বাইরে চলে গেলাম কিছু খাবার গ্রহনের জন্য। সবাই যে যার পছন্দ মত চপ, সিংগারা, টক দই, ঘুমনি, ভেলপুরি খেয়ে সকালের নাস্তা শেষ করলাম। ১লা বৈশাখ নতুন জামা পরতে হয় তাই আমরা ধুতি, ফতুয়া কিনে নিলাম সবাই নিজেদের প্রয়োজন মত। সেখান থেকে আমরা শ্রীশ্রীঠাকুর বাড়ী গেলাম। শ্রীশ্রীঠাকুর এই মাটিতে বসতেন, ঘুরে বেড়াতেন, ভক্তদের সাথে কথা বলতেন ভাবতে ভালো লাগছিল। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে পুরাতান অনেক স্মৃতিই এখন খুজে পাওয়া কষ্টকর। কিছু সময় সেখানে অতিবাহিত করে শ্রীশ্রীঠাকুর ও শ্রীশ্রীবড় মা-র সমাধি প্রনাম করতে গেলাম আমরা। পূজনীয় কাজল দা-র বাড়ি ও উৎসব অঙ্গনে ঘুরাঘুরি করে রুমে ফিরে আসলাম সবাই। দিনের তাপমাত্র অনেকটাই অসহনীয় ছিল অনেকের জন্য়, তাই বেশিক্ষন বাইরে না ঘুরাঘুরিই ভাল।

দুপুরের আনন্দ বাজার শেষ করলাম। কিছুটা ভাত-ঘুম দিয়ে আমরা বেড়িয়ে পরলাম দ্বারকা নদ দেখতে। আমি ভেবেছিলাম বিশাল নদি, জল, ঢেউ থাকবে কিন্তু সেখানে গিয়ে আমার ভুল ভাঙ্গলো। ভাগীরথী নদীর একটি উপনদী হলো দ্বারকা নদ। অনেকে একে বাবলা নদও বলে থাকেন। যেহেতু পাহাড়ী নদ তাই এক সময় প্রচুর খরস্রোতা থাকলেও এখন শুধুই পাথর আর তার সৃতি। দ্বারবাসসিনী ও তারাপীঠ এই দুটি শক্তি মন্দির এই নদের তীরেই অবস্থিত। 

সন্ধা প্রার্থনার আগেই আমরা সেখান থেকে ফিরে আসি, যেকয়দিন আমি বিবেক-বিতান ছিলাম তার বেশির ভাগ সময়ই ধুতি ফতুয়া পরে ঘুরতাম। তখন নিজের কাছে একটি পবিত্র ভাব থাকতো। দেওঘরের আবহাওয়া ও খাবার জলের কিছু একটি বিশেষত্ব ছিল। যার কারনেও হয়তো শ্রীশ্রীঠাকুর এখানেই এসে ছিলেন তার নিলা করার জন্য। বিবেক-বিতানের দ্বিতীয় তলার মন্দিরে সমবেত প্রার্থনা করলাম। সেখানে উপস্থিৎ ছিলেন পূজনীয় শ্রীবৌধায়ন চক্রবর্ত্তী দাদা। প্রার্থনা শেষে পূজনীয় দাদা সকলের খোজ খবর নিলেন। 

লাইব্রেরী থেকে “শ্রুতিবানী” বইটি ক্রয় করলাম এবং পূজ্য়পাদ দাদাকে অনুরোধ করি প্রথম ভ্রমনের সৃতি স্বরুপ তার স্বাক্ষর করে দিতে। আমাদের মত একে একে অনেক ভক্ত আসলো পূজ্য়পাদ দাদাকে প্রনাম করতে। কথা প্রসঙ্গে কথা হলো শ্রীশ্রীঠাকুর থাকাকালীন তো অনেককেই তাঁর আশির্বাদ স্বরুপ একটি বিশেষ দন্ড দিতেন। এখন সাধারনত সহ-প্রতি ঋত্বিক দাদারা তা গ্রহন করে থাকেন ও যাজনে নিয়ে যান। বিধান কাকর আগে থেকেই এই দন্ড গ্রহন করার ইচ্ছা ছিল। যখন জানতে পারলাম এই বিশেষ দন্ডটি গ্রহন করতে হলে তাকে পূজনীয় অধ্যক্ষের কাছে আগে চাইতে হবে। তিনি তখন তার আনুষ্ঠানিকতার আয়োজন করেন। আমি অধ্বর্য্যু, যখন জানলাম আমিও চাইলে তা গ্রহন করতে পারি। তখন কিছুটা আনন্দিত হলাম ও  এই লোভটি বাস্তবে পরিনিত করলাম। 

ধারাবাহিক ভাবে কল্যাণাংশু নাহা (সহ-প্রতি ঋত্বিক), বিধান চন্দ্র শীল (সহ-প্রতি ঋত্বিক) ও প্রহলাদ পোদ্দার (সহ-প্রতি ঋত্বিক) দাদারা একে একে তাদের আশির্বাদ দন্ডটি গ্রহন করলেন। শেষে আমি রামকৃষ্ণ সরকার (অধ্বর্য্যু) হিসবে পূজ্যপাদ দাদার কাছ থেকে আশির্বাদ দন্ডটি গ্রহন করি। আমার বিশেষ প্রাপ্তি হলো অধ্বর্য্যু হিসেবে এই দন্ডটি সাধারনত কেও নেয় না, হয়তো আমিই ব্য়তিক্রম একজন। তারপর সবাই আশির্বাদ দন্ড সহিত পূজ্যপাদ দাদা কে প্রনাম করলাম, পূজ্যপাদ দাদা আমাদের দন্ড বিষয়ক কিছু নিয়ম-কানন বলে দিলেন। অনেক ঘুরাঘরি করে বাজার থেকে দন্ডের জন্য দুইটি করে কাপড়ের কভার কিনে সবাই কক্ষে ফিরে আসলাম। বাংলাদেশের অনেকেই মনে করেছিল আমার হয়তো আশির্বাদ দন্ডের সাথে সাথে সহ-প্রতি ঋত্বিক এর পবিত্র পাঞ্জা হয়েছিল কিন্তু তা সঠিক নয়।  

রাত্রে আনন্দ বাজার শেষ করে কক্ষে এসে আগামীকালের জন্য কি করা যায় তার আলোচনা হলো। কিভাবে দন্ডটি পবিত্র রাখা যায় ও এর প্রনাম মন্ত্রটি শেখার চেষ্টা করলাম আমরা। যেহেতু মূল উৎসবের আরো একদিন বাকি আছে তাই আগামীকালই সব ঘুরাঘরি শেষ করতে হবে। সেই মোতাবেক গাড়ী ঠিক করে রাখা হলো। একবেলার আনন্দ বাজারে সবার কত টাকা দেওয়া যায় তার সিদ্ধান্ত নিলাম আমরা।

পশ্চম দিন ...


   







No comments:

Post a Comment